Ramayana Saree: শাড়িতেই গোটা কৃত্তিবাসী রামায়ণকে ফুটিয়ে তুললেন বাঙালি তাঁত শিল্পী। আর সেই শাড়িই এবার স্থান পেতে চলেছে অযোধ্যার রাম মন্দিরে। বাংলার প্রখ্যাত তাঁত শিল্পী বীরেন বসাকের অপরূপ সৃষ্টি এবার শোভা পাবে রাম মন্দিরে।
গোটা সাত কাণ্ড রামায়ণ যে শাড়িতেও সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা যায় তার প্রমাণ আগেই দিয়েছেন বাংলার ফুলিয়ার তাঁতশিল্পী বীরেন কুমার বসাক। ইতিমধ্যেই পেয়েছেন পদ্মশ্রী-সহ একাধিক জাতীয় পুরষ্কার। বীরেক বসাকের সেই অপরূপ শিল্পকর্ম এবার স্থান পেতে চলেছে অযোধ্যার রাম মন্দিরে।
প্রায় ২ বছরের চেষ্টায় এক লক্ষ আশি হাজার টাকা খরচে তৈরি করা হয়েছে এমন এক শাড়ি। ফুলিয়ার কবি কৃত্তিবাস আর রামায়ণকে মিলিয়ে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন তিনি। রাম মন্দির ট্রাস্টের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথাও হয়েছে এক প্রস্থ। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৬ জানুয়ারি বীরেনবাবু নিজেই যাবেন রাম মন্দিরে। বাংলার তাঁতিদের তরফে বিরল এই সৃষ্টি তুলে দেওয়া হবে রাম মন্দির ট্রাস্টের হতে।
ছেলে অভিনব বলেন, "সেটা ১৯৯৫ সালের কথা। সে সময় টিভির সিরিয়াল রামায়ণ দেখেই শাড়িতেই গোটা রামায়ণ ফুটিয়ে তোলার ইচ্ছে জাগে বাবা বীরেন বসাকের। ফুলিয়ার বয়রা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বাংলা রামায়ণের স্রষ্টা কৃত্তিবাস। কৃত্তিবাসের জন্মভিটেতে আজও রয়েছে কৃত্তিবাস স্মৃতি গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালা। সেখানে গিয়ে একটা প্রাথমিক ধারণা পান বাবা। এর সঙ্গে নিজের কল্পনাকে জুড়ে শাড়িতে ফুটে ওঠে গোটা রামায়ণ"।
২০২১ সালে পদ্মশ্রী পুরস্কার পান তিনি। শাড়িতে এমন সৃষ্টি মেলে ধরে সেই শাড়ি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন তিনি। মোদী নিজেও এই শাড়ি দেখে শিল্পীর প্রশংসা করেন । তিনি ট্যুইট করে লিখেছিলেন 'বাংলার তাঁত শিল্পীর অসাধারণ কীর্তি। শাড়িতে ভারতের ইতিহাস সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলেছেন। এমন উপহারে আপ্লুত আমি'।
নদিয়ার শান্তিপুর ব্লকের ফুলিয়ার জনপ্রিয় তাঁতশিল্পী বীরেন কুমার বসাক। হাতে রয়েছে তাঁর অসাধারণ শিল্পদক্ষতা। নিজের হাতের জাদুতে তিনি অনেক সামান্য শাড়িকে করে তুলেছেন অসামান্য। শিল্পী হিসেবে এই মহৎ প্রতিভার অধিকারী হওয়ায় রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পেয়েছেন পদ্মশ্রী সম্মানও।
উল্লেখ্য, বইয়ের পাতা থেকে একটা গোটা মহাকাব্য শাড়িতে ফুটিয়ে তোলা আর যাই হোক চারটিখানি কথা নয়! চারশো টাকা থেকে শুরু হয় কুড়ি লক্ষ টাকার শাড়ি পাওয়া যায় বীরেনবাবুর তাঁতঘরে। যে শাড়িগুলি প্রতিটিই হাতে বোনা।
প্রায় ২ বছরের চেষ্টায় এক লক্ষ আশি হাজার টাকা খরচে তৈরি শাড়িটি বাংলার তাঁতিদের তরফে রাম লালার উপহার হিসাবে যাচ্ছে বলেই জানিয়েছে অভিনব। রাম মন্দিরের তরফে বাংলার এমন শিল্পকর্মকে কুর্নিশও জানিয়েছে রাম মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দির উদ্বোধনের পরই আগামী ২৬ জানুয়ারি নিজের তৈরি সেরা সৃষ্টি নিয়ে রাম মন্দির যাবেন শিল্পী নিজেই। শুরুতে সাত থেকে আট জন শিল্পীকে নিয়ে কাজ শুরু করলেও এখন প্রায় ৭ হাজারের বেশি তাঁত শিল্পীকে নিয়ে কাজ করেন তিনি। তাঁর হাতের তৈরি শাড়ি গ্রাহকের তালিকায় রয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়, থেকে শুরু করে আশা ভোঁসলে, ডোনা গাঙ্গুলি সহ স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বরা।