জটিল অস্ত্রোপ্রচার সফল হল দিঘা হাসপাতালে। ৮০ বছরের বৃদ্ধার স্তন থেকে ১২০০ গ্রামের টিউমার বাদ দিলেন চিকিৎসকরা। দিঘা রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের জন্ম ইতিহাসে এত বড় মাপের জটিল অস্ত্রোপচার এই প্রথম। চিকিৎসকদের এই প্রচেষ্টা সাড়া ফেলে দিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এইচডিইউতে বর্তমানে দিব্যি সুস্থ আছেন রামনগর থানার রানিসাই এলাকার বাসিন্দা বাসন্তী পয়ড়্যা। বায়োপ্সি রিপোর্ট দেখে শুরু করা হবে তাঁর পরবর্তী চিকিৎসা।
৮ বছর আগে বৃদ্ধা লক্ষ্য করেন যে, তাঁর বাম স্তনে একটু ফোলা ভাব। তার পর থেকেই ওই ফোলা অংশ আয়তনে ক্রমশই বাড়তে থাকে। প্রথমে এ নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন না হলেও বছর তিনেক আগে বক্ষে অস্বাভিক যন্ত্রণা শুরু হয়। তখন ওই বৃদ্ধা দিঘা হাসপাতালের দ্বারস্থ হন। সেখানে চিকিৎসা করার পরেও তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়নি। অন্যত্র চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছিলেন দিঘা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কিন্তু বৃদ্ধার কোথাও না গিয়ে প্রায়ই যন্ত্রণা বাড়লেই চলে আসতেন দিঘা হাসপাতালে। এইভাবেই কাটছিল দিন।
মাস চারেক আগে দিঘা হাসপাতালে যোগদান করেন জেনারেল সার্জেন ডাঃ বীরেন্দ্র কুমার সাঁতরা। তাঁর কাছে চিকিৎসা শুরু করেন বৃদ্ধা। বীরেন্দ্র সন্দেহ করেন যে, তাঁর স্তনে বিরল ফিলোডস টিউমার হয়েছে। এর পরই কয়েকদিন আগে বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করা হয়। তারপরই তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। সেই মতো বুধবার রোগীকে সম্পূর্ণ অজ্ঞান না করে শুধুমাত্র লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া করে প্রায় দু'ঘণ্টার চেষ্টায় বাদ দেওয়া হয় ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ওই টিউমার।
অস্ত্রোপচারে সার্জেন বীরেন্দ্রকুমারকে সাহায্য করেন অ্যানেস্থেসিস্ট ডাঃ ধ্রুব মজুমদার এবং হাসপাতালের দুই স্টাফ নার্স। জটিল অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করার পরে স্বস্তির হাসি চিকিৎসকদের মুখেও। তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা। দিঘা রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের সুপার সন্দীপ বাগ বলেন, 'এত বড়মাপের অস্ত্রোপ্রচার এর আগে কখনও হয়নি আমাদের হাসপাতালে। একেবারে খারাপ অবস্থায় পড়েছিল অপারেশন থিয়েটার। শেষ পর্যন্ত অপ্রতুল পরিকাঠামো সম্বল করে ঝুঁকিপূর্ণ এই অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পরে রোগীর অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল। বৃদ্ধা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরাও খুশি।'