তৃণমূলেই ফিরছেন শোভন-বৈশাখী। বুধবার তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে বৈঠক শেষে যা এককথায় পাকা। কাননের জোড়া-ফুলে ওয়াপসি নিয়ে তারপরই মুখ খুলেছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়।
শোভন চট্টোপাধ্য়ায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাজনৈতিকভাবে 'দিদি'র ইচ্ছে বাস্তবায়িত করাই এবার তাঁর কাজ হবে। দিদি ভাইয়ের মনখোলা আলাপচারিতা সামনে থেকে দেখে আপ্লুত শোভন-বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, 'অভিমানের প্রাচীর ভেঙে গিয়েছে।'
এসবের মধ্যেই উঠেছে রত্না প্রসঙ্গ। নাম শুনতেই যাঁকে তাঁদের জীবনে 'অপ্রাসঙ্গিক' বলে জানিয়েছেন শোভন বৈশাখী। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'যাঁর নাম করলেন তিনি আমাদের কাছে অপ্রাসঙ্গিক। যাঁকে দেখে মানুষ তৃণমূল করে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছি ও কথা বলেছি আমরা। তাই এক্ষেত্রে অন্য কেউ অপ্রাসঙ্গিক।'
এরপরই মুখ খুলেছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। শোভন বৈশাখীর তৃণমূলে ফেরা নিয়ে বেহালা পূর্বের বিধায়ক বলেন, 'শোভনবাবুর অভিমান কেন হল সেটা কেউ জানে না। আমি বুদ্ধিমান রাজনীতিবিদ হিসাবেই ওনাকে চিন্তাম। ফলে দিদির উপর অভিমান করে দল ছাড়াটা ওনার চরিত্রের সঙ্গে বেমানান। আশা করব দিদি ভবিষ্যতে বকলে উনি আর অভিমান করবেন না।'
বৈশাখীকে নিয়ে শোভনের দলে ফেরাটাকে কীভাবে দেখছেন রত্না? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে রত্না বলেছেন, 'মমতা দি ও অভিষেকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এখানে আমি স্বাগত জানালাম কিনা সেটা কোনও ম্যাটার করে না।' দলের প্রয়োজনে শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে এক মঞ্চে যাবেন? রত্নার স্পষ্ট উত্তর, 'দল নির্দেশ দিলে সেটা করতে কোনও অসুবিধা নেই।'
আরও পড়ুন- ‘দিদির ইচ্ছে বাস্তবায়িত করব’, বৈশাখীকে নিয়ে মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দাবি শোভনের
কিন্তু, রত্নাকে তো 'অপ্রাসঙ্গিক' বলেছেন শোভন-বৈশাখী। রত্না বলেছেন, 'আমি যেমন ইরেলিভেন্ট, তেমনই আমার জীবনেও ওদের কোনও প্রভাব নেই। তবে বলেছিলেন কেন, রত্না যে দলে আছে সেই দলে আর ফিরব না।'
তৃণমূলে শোভন ছিলেন নেত্রীর খুবই ঘনিষ্ঠ। তাঁর মোবাইলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নম্বর ‘মা’ বলে সেভ করা ছিল। কিন্তু, ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েনে তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হয়। ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রিয় কাননকে মন্ত্রীত্ব ও কলকাতার মেয়রের পদ থেকে সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই ক্রমে জোড়া-ফুল বিরোধী নানা কথা বলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। পরে যোগ দেন বিজেপিতে। কিন্তু, সেখানেও শুরু থেকেই টিঁকতে পারেননি রাজ্যের প্রাক্তন এই মন্ত্রী। প্রথমে পদ, পরে নিজের পছন্দের বিধানসভা কেন্দ্র থেকে টিকিট না মেলায় বিজেপি ছাড়েন শোভন-বৈশাখী। এরপর ক্রমেই দলহীন হয়ে রাজ্য রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েন শোভন। এরমধ্যেই শোভনের স্ত্রী রত্না স্বামীর কেন্দ্র বেহালার পূর্ব থেকে বিধায়ক হয়েছেন। জিতেছেন কলকাতার ১৩১ নং ওয়ার্ড থেকেও। এই ওয়ার্ড থেকেই জিততেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।