এসএসসি দুর্নীতি বা টেট কেলেঙ্কারিতে তদন্তের গতি বাড়িয়েছে ইডি, সিবিআই। জেলে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এসএসসি উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি শান্তিপ্রসাদ সিনহা ও আরও ১ আধিকারিককে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। শ্রীঘরে এসএসসির প্রাক্তন সভাপতি কল্যাময় গঙ্গোপাধ্যায়ও।
টেট দুর্নীতির দায়ে গারদে পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। জেরায় জন্য প্রায়ই ডাক পড়ছে অভিযুক্তদের ঘনিষ্ঠদের। এসএসসি সংক্রান্ত একাধিক মামলাই চলছে কলকালাত হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে।
আম আদমির কাছে রীতিমত নায়ক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোর্টেই তার প্রমাণ মিলেছে। এদিন এজলাস থেকে সব মিটিয়ে ওঠার জন্য তখন ব্যস্ত বিচারপতি। তখনই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনে এসে দাঁড়ান বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তি। হাতজোড় করে নিজেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিবেশী ও নাকতলার বাসিন্দা বলে দাবি করেন তিনি। এরপরই সটান বলেন, 'আমি নাকতলায় থাকি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাড়ায়। আপনি যা করেছেন তার জন্য অনেক ধন্যবাদ।'
ওই ব্যক্তির দাবি, 'সবকিছু আমাদের এলাকার বাচ্চা ছেলেরাও জানত। আমরাও জানি অনেক আগে থেকেই। কিন্তু কিছু বলতাম না। কুকুরের বিষয়ে বাড়ির পরিচারিকাও জানতেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনি পূজনীয়। আমার মা আপনার কথা বলেন।'
বিচারপতিকে ওই ব্যক্তি বলেন তাঁর নাম ব্যক্তির নাম সুনীল ভট্টাচার্য। এবার তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। শুরুতেই সুনীলবাবুর মাকে প্রণাম জানান বিচারপতি। সুনীলবাবু জানান, বাংলা নিয়ে অনেকে খারাপ মন্তব্য করেন, ভূবনেশ্বর থেকে ফেরার পথে তাঁকে রাজ্য নিয়ে খোঁটা শুনতে হয়েছে। জবাবে বিচারপতি বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গের গর্বের জায়গা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমাকেও শুনতে হয়। কয়েক বছর আগে পুরী থেকে আসার পথে এক সহযাত্রী বলেন, বাংলার কলেজে ভর্তি হতে টাকা দিতে হয়। অথচ ভুবনেশ্বরে এটা হয় না। পশ্চিমবঙ্গের গর্বের জায়গা ফিরিয়ে আনতে হবে। সবাই চেষ্টা করুন।'
কথা এগোলে সুনীল বলে বসেন, 'আপনি অনেক কিছু করেছেন। এ বার আসল অপরাধী ধরা পড়বে বলে মনে হচ্ছে।' উত্তর দিতে গিয়ে কিছুটা সন্দিহান সুরে বিচারপতি বলেন, 'আসল অপরাধী হয়তো আমার জীবৎকালে ধরা পড়বে না। দেখা যাক, ইডি, সিবিআই কী করে।'