Advertisment

এবার অন্য যুদ্ধে নামলেন রেণু, চোয়াল শক্ত করে স্বামীর যাবজ্জীবনের দাবি

কাটোয়া মহকুমা আদালতে গোপন জবানবন্দি দিতে এসে রেণু খাতুন সেই দাবিই জোরাল ভাবে তুলে ধরলেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
reanu khatun east burdwan katwa court

কাটোয়া মহকুমা আদালতে রেণু খাতুন। ছবি- প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়

জীবন যুদ্ধে জয় হাসিল করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে নার্সের সরকারি চাকরি পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এবার অন্য লড়াইয়ের ময়দানে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের কোজলসা গ্রামের বধূ রেণু খাতুন। তাঁর হাত কেটে নেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি নিশ্চিতের আইনি লড়াইয়ে রেণু। বুধবার
কাটোয়া মহকুমা আদালতে গোপন জবানবন্দি দিতে এসে রেণু খাতুন সেই দাবিই জোরাল ভাবে তুলে ধরলেন। জানিয়ে দিলেন ,তাঁকে নার্সের সরকারি চাকরি করতে দেবে না বলে স্বামী ভাড়াটে দুস্কৃতিদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর
ডান হাত কেটে নিয়েছে। অপরাধীদের সকলের যাতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় এখন সেটারই আইনি যুদ্ধ চালাবেন রেণু।

Advertisment

কাটোয়া মহকুমা আদালত চত্ত্বরে দাড়িয়ে রেণু খাতুন এদিন তাঁর স্বামী সরিফুল শেখকেও একহাত নেন। রেণুর দাবি, 'নিজের অপরাধকে লঘু সাব্যস্ত করতে তাঁর চরিত্র নিয়ে স্বামী সরিফুল মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। তাই হাত কেটে নেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না।

প্রসঙ্গত ,সরকারি হাসপাতালের নার্স হওয়ার জন্য রেণু খাতুনের জীবন সংগ্রামের কাহিনী আজ বাংলার মানুষের মনে টাটকা। কেতুগ্রামের চিনিসপুর গ্রাম নিবাসী আজিজুল হকের মেয়ে রেণু খাতুন আজ অন্য মহিলাদের কাছে লড়াইয়ের প্রেরণা হয়ে উঠেছেন। যদিও ভালবেসে ২০১৭ সালের অক্টোবর স্থানীয় কোজলসা গ্রাম নিবাসী যুবক সরিফুল শেখকে বিয়ে করার পর নার্সিং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রেণুর জীবন আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতোই কাটছিল। একাধিক বেসরকারি সংস্থায় নার্সিংয়ের কাজ করার সাথে রেণু কিছুদিন আগে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে নার্সপদে চাকরির পরীক্ষা দেন। সেই পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণও হন। চাকরিতে যোগ দেওয়ার জন্য তিনি দিন গুনছিলেন। কিন্তু সরকারি নার্সের চাকরিতে যোগদানের ক্ষেত্রে চরম বাধা হয়ে দাঁড়ান তাঁর স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন ।

ভালবেসে রেণু যাঁকে জীবন সঙ্গী হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন সেই সরিফুল শেখের মনে ধারণা জন্মায় রেণু সরকারি চাকরিতে যোগ দিলে সে আর তার সঙ্গে সংসার করবে না। রেণু তাঁর হাতছাড়া হয়ে যাবে। তাই রেণু যাতে নার্সের সরকারি চাকরি করতে না পারে তার পরিকল্পনা কষে ফেলে সরিফুল। পরিকল্পনা
মত গত ৪ জুন রাতে ভাড়াটে দুস্কৃতিদের সঙ্গে নিয়ে সরিফুল শ্বশুর বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা রেণুর ডান হাতের কব্জিতে কোপ মারে। নৃশংস ওই ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ ৫ জুন রেণুর বাবা আজিজুল হক
কেতুগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নেমে পুলিশ দু'দিনের মধ্যেই সরিফুলকে গ্রেফতার করে। তারপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার তালগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে দুই ভাড়াটে দুস্কৃতি আসরফ আলি শেখ ও হাবিবুর রহমানকে। তিন জনকে
হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে গোটা ঘটনার মাস্টারমাইণ্ড সরিফুলের মাসতুতো ভাই চাঁদ মহম্মদ।পুলিশ তাঁকেও গ্রেফতার করে। এখন চারজনেরই ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে। সেখানেই যাতে জীবনভর তাদের থাকতে হয় সেই চেষ্টাতেই রেণু খাতুন।

East Burdwan burdwan Katwa
Advertisment