/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/10/mamata-banerjee-latest-759.jpg)
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: টুইটার।
উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের জমির সত্ত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের জমির উপর গড়ে ওঠা ৯৪টি উদ্বাস্তু কলোনিকে জমির মালিকানা হস্তান্তর করা হয়েছিল। এবার কেন্দ্রের জমি বা ব্যক্ত্যি মালিকানাধীন জমির উপর গড়ে ওঠা কলোনির বাসিন্দাদেরও সত্ত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। এই ঘোষণায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন রাজ্যের বিভিন্ন কলেনির বাসিন্দারা। তবে, এরই মাঝে কাঁটার মত বিঁধছে কেন্দ্রীয় সরকারের এনআরসির লাগুরর সিদ্ধান্ত।
রাজপুর-সোনারপুরের উদ্বাস্তু কলোনি নজরুল-পল্লীর বাসিন্দা সুব্রত দাশগুপ্ত। পরিবারের সবারই ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড রয়েছে। রয়েছে পাকা বাড়িও। তবুও সুব্রতবাবুকে এনআরসি আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তাঁর সঙ্গে কথায় কথায় জানা গেল প্রায় ১০০ বছর আগে দত্তগুপ্তের বাবা এসেছিলেন ঢাকা থেকে। তবে বেশিরভাগ বাসিন্দাই এসেছেন স্বাধীনতার পর। জীবীকার জন্য কেউ ব্যবসা করছেন, কেউ আবার সরকারি বা বেসরকারি চাকুরে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের জমি উদ্বাস্তুদের দেবে মমতা, রাজ্যের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন রাহুল সিনহার
মধ্যবয়সী তরুণ দে নজরুল পল্লীরই বাসিন্দা। স্বাধীনতার পর যশোর থেকে এদেশে আসা তাঁর। তিনি বলেন,'অনেকের উদ্বাস্তু সার্টিফিকেট রয়েছে। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেরই তা নেই। যাদের নেই এনআরসি হলে তাদের জন্য বড় বিপদ। নাগরিকত্ব না পেলে তারা কী করবেন?' মুখ্যমন্ত্রী কলোনির জমির মালিকানা দিলে তা নথি হিসাবে কাজে লাগবে বলে মনে করেন নজরুল পল্লীর বাসিন্দারা।
আশা-আশঙ্কার দোলাচলে কলোনিবাসীদেশজুড়ে এনআরসি হবে। সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহের ঘোষণার পরই গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন,‘আমি মনে করি উদ্বাস্তুদের অধিকার রয়েছে। ১৯৭১ সালের পর প্রায় ৪৮ বছর কেটে গিয়েছে। উদ্বাস্তুরা ভোট দেন, দেশের নাগরিক হিসাবে বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকেন। কিন্তু এখনও কেন্দ্র বা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির উপর গড়ে ওঠা উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের জমির সত্ত্ব,পাট্টা মেলেনি। এবার ধীরে ধীরে সেই সমস্যার সমাধান করা হবে।’ রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন্ধ হওয়া বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার জমিতে দীর্ঘদিন ধরে যে উদ্বাস্তুরা বসবাস করছেন তাঁদের তিন একর পর্যন্ত জমির সত্ত্ব প্রদান করা হবে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে মমতা বলেন, ‘আমরা বহুবার কেন্দ্রকে এই সমস্যা সমাধানের কথা বলেছি। কিন্তু, তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। উলটে ওই জমি থেকে উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদের জন্য মাঝেমধ্যেই নোটিস পাঠায়। উদ্বাস্তুদের অধিকার কথা বিবেচনা করে তাই রাজ্য সরকারের তরফে যেখানে তাঁরা বসবাস করেন সেই জমির সত্ত্বাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ রাজ্যের এই পদক্ষেপে প্রায় ২৫ হাজার উদ্বাস্তু পরিবার উপকৃত হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: হারের ময়নতদন্ত করতে তিন কেন্দ্রে প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে দিল্লি
তবে, কলোনিগুলির অনেকেই আবার এই ঘোষণাকে বিশেষ আমল দিতে নারাজ। অতীত অভিজ্ঞাতায় তাঁরা দেখেছেন তৃণমূল সহ প্রায় সব রাজনৈতিক দলই কলোনিবাসীদের ভোট পেতে জমির পাট্টা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু, তা বাস্তবায়িত হয়নি। সোনারপুরেরই খুদিরাম পল্লীর বাসিন্দা আশিস ঘোষ জানান, 'এই প্রতিশ্রুতি কয়েশবার শুনেছি, কিন্তু কেউ এখনও কথা রাখেনি। মমতার সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলে আমাদের খুব সুবিধা হয়।'
বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দা ও শাসক দলের স্থানীয় নেতা নীতিশ চক্রবর্তীর কথায়, 'এখানকার বেশিরভাগই জমির পাট্টা পেয়ে গিয়েছেন। পুনর্বাসন দফতরের লাল ফিতের ফাঁসে বেশ কিছু কাজ আটকে রয়েছে। তবে দিদির ঘোষণা রূপায়িত হলে কোনও সমস্যা থাকবে না। আমরা পুরো বিষয়টি নিয়ে আশাবাদী।'
Read the full story in English
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us