একদিকে যখন গোটা দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস। ঠিক তখন কাটোয়ার মুখোপাধ্যায় বাড়ি নেতাজির স্মৃতি বুকে আগলে রেখে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতাজির ভূমিকাকে স্মরণ করছে। এই বাড়িতেই দুরাত কাটিয়ে গিয়েছিলেন নেতাজি। একথা মনে করলে আজও যেন গায়ে কাঁটা দেয় পরিবারের সকলেরই। বাড়ির পরতে পরতে রয়েছে ইতিহাস।
এবারের ৭৫ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ হবে ‘নারীকেন্দ্রিক’ এবং ‘উন্নত ভারত’ এবং ‘ইন্ডিয়া-মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ হবে এর মূল থিম। আজকের এই জমকালো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। প্রজাতন্ত্র দিবসের বিশেষ এই দিনে পিতামহকে লেখা নেতাজির সেই চিঠি হাতে নিয়েই স্মৃতিচারণে মগ্ন পরিবারের সদস্য রঘুনাথ মুখোপাধ্যায়।
দু’রাত তিন দিন এই বাড়িতেই কাটিয়েছেন নেতাজি। সেকথা মনে করলে আজও গায়ে কাঁটা দেয়। কাটোয়া শহরের বারোয়ারিতলার মুখোপাধ্যায় বাড়ির কথা সকলেই জানেন। এই বাড়িটিই স্বাধীনতা সংগ্রামী গুণেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি। আর সেখানেই এসেছিলেন নেতাজি। পুরনো দিনের লোহার ঘোরানো সিঁড়ি উপরের ঘরের আরাম কেদারায় বিশ্রাম নেওয়া, থাকা-খাওয়া, নেতাজির সেই সকল ব্যবহৃত জিনিস আসবাব আজও বুকে আগলে রেখেছেন পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন Premium: ডানা মেলল স্বপ্ন উড়ান, প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীর কর্তব্যপথে বাংলার ‘অগ্নিকন্যা’
পুরনো বাড়ির অনেক কিছু নষ্ট হয়ে গেলেও যেটুকু বেঁচে আছে তাতে ভারতের স্ব্বাধীনতা সংগ্রামের কাহিনী যেন ছড়িয়ে রয়েছে পরতে পরতে। পিতামহ গুণেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়কে নিজের হাতে একটি চিঠি লিখেছিলেন নেতাজি। আর সেই চিঠি আজও যত্ন করে রেখেছেন পরিবারের অন্যতম সদস্য রঘুনাথ মুখোপাধ্যায়। সেই চিঠির প্রতি ছত্রে লেখা ব্রিটিশদের হাত থেকে দেশকে উদ্ধারের মন্ত্র।
দিনটা ১৯৩১ সালের ২৯ ডিসেম্বর। কাটোয়ায় এসেছিলেন নেতাজি। ৩১ ডিসেম্বর সেখান থেকে ফেরেন। এই তিনটে দিন যেন পরিবারের কাছে শতাব্দীর সেরা সম্পদ। রঘুনাথ বাবু বলেন, 'সেই স্মৃতি আজও তাড়া করে বেড়ায় পরিবারের সদস্যদের। বাড়ির উপরের তলায় লোহার সিড়ি বেয়ে গিয়ে বিশ্রাম নিয়েছিলেন নেতাজি। ছিলেন তিন দিন দুই রাত। একথা ভাবলে আজও গায়ে কাঁটা দেয়। কাটোয়া ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সে সময়ের এক আস্তানা। বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী সে সময় ছিলেন এই শহরে। তাদের উদ্দীপ্ত করতে নেতাজি এসেছিলেন'।
গুণেন্দ্রনাথ বাবুর পৌত্র রঘুনাথবাবুর নেতাজিকে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। কিন্তু তাদের বাড়িতে নেতাজি এসে রাত্রি যাপন করেছেন, একথা বলতে গেলেই চোখে মুখে যেন এক আলাদা রোমাঞ্চ জেগে ওঠে। আজও নেতাজির স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছে কাটোয়ার বারোয়ারি তলার মুখোপাধ্যায় পরিবার।