যেন একেবারে বলিউডের 'মক্ষক্ষী' সিনেমা। খেতে বসলেই খাবারে মাছি। শুতে যাবেন, সেই সময়ও মশারির ভিতরে মাছি ঢুকে যাচ্ছে। সবসময় ঘরে-বাইরে ভনভন করছে মাছির দল। যার জেরে ব্যাপক রোগও ছড়াচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। হাজারো ওষুধ দিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। মাছিদের উপদ্রবে তাই একেবারে নাজেহাল অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন হুগলির গোঘাটের ভাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাদেশ্বর ও শাঁখাটি এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবার। যে উপদ্রবের হাত থেকে গ্রামের শিশু থেকে বৃদ্ধ, কারওর কোনও রেহাই নেই।
Advertisment
স্থানীয় গৃহবধূ সোমা ঘোষ বলেন, 'এত মাছি যে খেতে, শুতে পর্যন্ত পারছি না। ওষুধ দিয়েও লাভ হচ্ছে না। শিশুদের ডায়েরিয়া হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় কারও থেকে কোনও সাহায্য পাচ্ছি না। গ্রামে আত্মীয়- স্বজন আসা বন্ধ করে দিয়েছে। এবার দেখছি গ্রামটাই ছেড়ে দিতে হবে।'
কিন্তু, এত মাছি এল কোথা থেকে? স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বছর দুই আগে গ্রামেই একটি মুরগির ফার্ম তৈরি হয়েছে। লেয়ার মুরগি, অর্থাৎ যে মুরগি ডিম পারে, তার ফার্ম। এখানে ডিমের ব্যবসাও হয়। তারপর থেকে এই অবস্থা গ্রামের।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই পোলট্রি ফার্মের চারধারে এত নোংরা যে তার থেকেই মাছি উৎপন্ন হচ্ছে। এর ফলে গ্রামে ডায়েরিয়া-সহ বিভিন্ন রোগ লেগেই আছে। মাছি মারা, মাছি তাড়ানোর নানারকম ওষুধ ছড়িয়েও আটকানো যাচ্ছে না পতঙ্গদের দলকে।
গ্রামের বাসিন্দারা দ্রুত এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে চাইছেন। যদিও পোলট্রি কর্তৃপক্ষের দাবি, মাছির উপদ্রব বন্ধ করতে তাঁরাও যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন।
এই ব্যাপারে বাদেশ্বর গ্রামের যুবক তন্ময় ঘোষ বলেন, 'আমরা মুরগি বা পোলট্রি ফার্মের বিরুদ্ধে না। তবে ফার্মের মালিকেরও সমস্যাটা বোঝা উচিত। তাঁরা অবশ্য চারিদিকে ওষুধ ছড়ান। কিন্তু, সমস্যা হল তখন মাছিগুলো আবার গ্রামের বসতবাড়ির দিকে ঢুকে যায়। সবচেয়ে ভালো হত যদি গোটা পোলট্রি ফার্মটা চারিদিক থেকে নেট দিয়ে ঘিরে ফেলা যেত। কিন্তু, পোলট্রি ফার্মের কর্তারা সেই ব্যাপারে উদ্যোগ না-নেওয়ায় আমরা সমস্যা ভোগ করছি।'