Advertisment

অনুব্রত ঘনিষ্ট কোটিপতি তৃণমূল ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, বাসিন্দাদের চিঠি মমতাকে

আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষবিরুদ্ধে তোলাবাজি, বেআইনি বালির কারবার চালানো সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
residents Letter to mamata alleging corruption against billionaire tmc bloc president who closest to anubrata

রামকৃষ্ণ ঘোষের (বাঁদিকে) বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি আউশগ্রামের বাসিন্দাদের। ছবি- প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়

একসময়ে লোকের কাছে বিড়ি চেয়ে খেতেন। সেই ব্যক্তি অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ট হতেই মালিক হয়ে গিয়েছেন কোটি কোটি টাকার। গাড়ি, বাড়ি, একাধিক জমির মালিক হয়েছেন। যাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে তিনি হলেন পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষ। পাশাপাশি তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদেরও সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে তোলাবাজি, বেআইনি বালির কারবার চালানো সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ এনে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন ব্লকের কয়েকজন বাসিন্দা। ঘটনা জানাজানি হতেই আউশগ্রামের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও রামকৃষ্ণ ঘোষ দাবি করেছেন ,চক্রন্ত করে বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে এইসব মিথ্যা অভিযোগ করছে।

Advertisment

আউশগ্রামের কোটা অঞ্চলের রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা রামকৃষ্ণ ঘোষ। তিনি ডেকরেটর সামগ্রীর ব্যবসা করতেন। এলাকাবাসীর দাবি, তাঁর ডেকরেটর ব্যবসা তেমন চলতো না। এর আগে আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন ধনকুড়া গ্রামের বাসিন্দা সুভাষ মণ্ডল। দল ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে সুভাষ মণ্ডলকে ভাতার কেন্দ্রের প্রার্থী করে। তিনি বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার হন। এরপরই বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা আউশগ্রামের দলীয় পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের দায়িত্ব দেন রামকৃষ্ণ ঘোষকে। ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার পর থেকেই চড়চড় রামকৃষ্ণের আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটতে শুরু করেছে।

publive-image
দলীয় সভায় কেষ্ট মণ্ডলের সঙ্গে রামকৃষ্ণ ঘোষ।

রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ সাবির হোসেন বলেন, 'একসময়ে অভাবের কারণে রামকৃষ্ণ ঘোষ অপরের কাছে বিড়ি চেয়ে খেত। অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ট হওয়ার সুবাদে ব্লক তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পরেই রামকৃষ্ণ ঘোষের আর্থিক বৃদ্ধি ঘটে। ঠিকাদারি, বেআইনি বালির কারবার, বেআইনি কয়লার কারবার সহ নানা অন্যায় পথে রামকৃষ্ণ ঘোষ প্রচুর টাকা রোজগার করেন। ব্লকের রাস্তাঘাটের টেণ্ডারও তিনিই পরিচালনা করেন। এইসব করে গ্রামে তিনতলা বাড়ি ছাড়াও রামকৃষ্ণ কোটি কোটি টাকা খরচ করে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে দুটি বাড়ি তৈরি করেছেন। অনেক জমিও কিনেছেন।'

আরও পড়ুন- দিলীপের পর সুকান্ত, সিবিআইয়ের ভূমিকায় বেজায় ক্ষুব্ধ বঙ্গ বিজেপি সভাপতি

গ্রেমেরই অপর বাসিন্দা সাবির হোসেনের কথায়, 'আমরা রামকৃষ্ণ ঘোষের এইসব অপকর্ম ও বেআইনি কারবার নিয়ে আগেও দল ও প্রশাসনের নানা মহলে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের অভিযোগ চেপে দেওয়া হয়েছে। তাই এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ পত্র পাঠিয়েছি।' উত্তম আঁকুড়ে বলেন, 'রামকৃষ্ণ ঘোষ আগে প্যাণ্ডেলের ব্যবসা করে কিছু করতে পারে নি। ব্লক তৃণমূলের সভাপতি হয়ে যাওয়ার পর অনেক জমিজায়গা,বাড়ি কিনেছেন। দু'মাস আগেও একটা বাড়ি কিনেছে। রামকৃষ্ণ বালি ছাড়াও অবৈধ কয়লার কারবারের যুক্ত।'

এলাকার লোকজন এইসব অভিযোগ করলেও তৃণমূল নেতা রামকৃষ্ণ ঘোষ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । উল্টে তিনি দাবি করেন, সবই বিরোধীদের চক্রান্ত। একই সঙ্গে বলেন, 'আমার জমিজায়গা যা আছে সেগুলো সব আমার পৈতৃক সম্পত্তি। আমি প্যান্ডেলের ব্যবসা করি। আমার স্ত্রী কলেজে চাকরি করেন। সেই চাকরি ২০০৮ সালে পাওয়া। আমার দাদা সায়েন্টিস্ট। আমার ভাই ইঞ্জিনিয়ার। ভাইয়ের নিজস্ব কারখানা আছে। আমাদের জমিজায়গা, পুকুর যা আছে তা বাপ ঠাকুরদার কাছ থেকে পাওয়া।'

রামকৃষ্ণের দাবি সমর্থন করেছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি তথা রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু। তিনি বলেন, 'এসব বিরোধীদের অভিযোগ। তারা চক্রান্ত করে তৃণমূল কংগ্রেসকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে।' বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র জানিয়েদেন, 'একটু অপেক্ষা করুন। ধীরে ধীরে সব পরিস্কার হয়ে যাবে। অন্যায় করে কেউ পার পাবে না।'

tmc Mamata Banerjee anubrata mondal East Burdwan burdwan
Advertisment