Advertisment

তৃণমূল বিধায়কের নাম করে তোলাবাজি, রেস্তরাঁ মালিকের ভাইপোকে বেধড়ক মারধর দুষ্কৃতীদের

তিন দিন আগে খোদ বর্ধমান শহরের ছোট নীলপুর এলাকায় এমন ঘটনা ঘটলেও দুষ্কৃতীদের কেউ এখনও গ্রেফতার হয়নি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
BJP,District News,Purba Bardhaman,Political Tussle,TMC,জেলার খবর, বিজেপি, তৃণমূল, পূর্ব বর্ধমান, রাজনৈতিক চাপানউতোর

দুর্গাপুজো শুরুর প্রাক্কালে বর্ধমান শহরের ছোট নীলপুর এলাকায় নতুন রেস্টুরেন্ট চালু করেন সুজিত চৌধুরী। ছবি- প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়

রেস্তরাঁ চালাতে গেলে প্রতিদিন মদের বোতল দেওয়ার পাশাপাশি দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা তোলা। সদ্য চালু করা রেস্তরাঁর মালিক দুষ্কৃতীদের এই ফতোয়া যথাযথ ভাবে মানতে পারেননি। তার জন্য দুষ্কৃতীদের ব্যাপক মারধর হজম করতে হল মালিকের ভাইপোকে। তিন দিন আগে খোদ বর্ধমান শহরের ছোট নীলপুর এলাকায় এমন ঘটনা ঘটলেও দুষ্কৃতীদের কেউ এখনও গ্রেফতার হয়নি। বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেছে, ’তোলা চাওয়া দুষ্কৃতীরা শাসকদের আশ্রিত বলেই এখনও বুক ফুলিয়ে তারা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে’। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব দাবি করেছেন, ’দোষী যে দলেরই হোক তার শাস্তি হবেই’।

Advertisment

দুর্গাপুজো শুরুর প্রাক্কালে বর্ধমান শহরের ছোট নীলপুর এলাকায় নতুন রেস্টুরেন্ট চালু করেন সুজিত চৌধুরী। রেস্টুরেন্ট ভাল চললে সংসারে দুদিন ফিরবে এমনটা প্রত্যাশা ছিল সুজিতবাবুর। কিন্তু এলাকার দুষ্কৃতীদের দৌরাত্মের কারণে ব্যবসায়ীর সব প্রত্যাশাই থমকে যায়। অভিযোগ, এলাকার একদল দুষ্কৃতী ওই রেস্টুরেন্ট মালিকের কাছে ৫০ হাজার টাকা তোলা চায়। এমনকি রেস্টুরেন্ট চালানোর জন্য প্রতিদিন মদের বোতল দিতে হবে বলেও জানায়।

দুষ্কৃতীদের এমন হুমকিতে ভীত হয়ে ব্যবসায়ী ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ছিলেন। কিন্তু তাতে দুষ্কৃতীদের মন ভরেনি। দাবি মত পুরো ৫০ হাজার টাকা তোলা না মেলায় গত ৭ অক্টোবর শহর বর্ধমানে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল চলার দিন ওই রেস্টুরেন্টে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। তারা রেস্টুরেন্ট মালিকের ভাইপোকে রাস্তায় ফেলে ব্যাপক মারধর করে। দোকানে কর্মচারীরা জানান,’ঘটনার দু’দিন আগে দুষ্কৃতীরা রেস্টুরেন্টে এসে মাংস ও ডিম চায়। কিন্তু বিল ছাড়া তাঁরা তা দিতে অস্বীকার করেন। এরপরেই ওই দুষ্কৃতীরা হুমকি দিয়ে চলে যায়। এর দু'দিন পর দুষ্কৃতীরা রেস্টুরেন্টে এসে মালিকের ভাইপোকে রাস্তায় ফেলে ব্যাপক মারধর করে চলে যায়’। এই ঘটনার পর ভয়ে আতঙ্কে ব্যবসায়ী দু’দিন রেস্তরাঁ বন্ধ রাখেন। ঘটনার বিষয়ে ব্যবসায়ী বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের পরেও অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোয় আতঙ্কিত তাঁর পরিবার।

আরও পড়ুন আপাতত শান্ত মোমিনপুর, অস্বস্তিতে স্থানীয়রা, চারদিকে জঞ্জাল, এলাকা যেন সাদা উর্দিধারীদের দুর্গ

রেস্টুরেন্ট মালিক সুজিত চৌধুরী এদিন বলেন, 'আমরা মধ্যবিত্ত ঘরের মানুষ। অনেক কষ্ট করে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করছি। আমরা শান্তিতে ব্যবসা করতে চাই । কিন্তু রেস্টুরেন্ট খোলার আগে থেকেই কয়েকজন হুমকি দিচ্ছিল, রেস্টুরেন্ট চালাতে গেলে তাঁদের ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। এছাড়া তাঁরা প্রতিদিন মদের বোতল দেওয়ার দাবিও করে’। সুজিতবাবু বলেন, "সেই হুমকিতে ভয় পেয়ে আমার ছেলে ওদের ৩০ হাজার টাকা দেয়। তার পরেও ওই দুষ্কৃতীরা আমার ভাইপোকে ব্যাপক মারধর করে। এই ঘটনা দেখে ‘শেফ’ ভয় পেয়ে গিয়ে কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে।'

এমন ঘটনা বিষয়ে বিজেপি জেলা যুব মোর্চার সভাপতি পিন্টু সাম বলেন, ’শাসকদলের বিধায়ক ও কাউন্সিলরের মদতেই শহর বর্ধমানে দুষ্কৃতীদের এত বড়বাড়ন্ত হয়েছে’। যদিও এলাকার কাউন্সিলর ও জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি রাসবিহারী হালদার পরিষ্কার জানিয়ে দেন, 'এমন জঘন্য কাজের জন্য দোষীদের শাস্তি পাওয়া উচিত। প্রশাসন প্রশাসনের মতো কাজ করবে। এমন অন্যায় কাজে যুক্তরা কেউ পার পাবেন না’। একই ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপত্র দেবু টুডু বলেন, ’এসব গর্হিত কাজ। আমাদের দল এসব কাজের তীব্র বিরোধী। পুলিশ আইন মেনে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে’।

বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস এদিন বলেন, ’এমন ঘটনা বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তবে এমন ঘটনা ঘটলে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে’। ঘটনা বিষয়ে বর্ধমান থানার এক অফিসারের বক্তব্য, অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক। পুলিশ তাদের সন্ধান চালাচ্ছে।

tmc East Burdwan Restaurant
Advertisment