ভালোবাসার দিনে সঙ্গিনী নেই কাছে। তার উপস্থিতি টের পেলেও দেখার সুযোগ নেই। ফল মনখারাপ আকবরের। আর ভালবাসার দিনে নিজের প্রিয়জনের কাছে আসতে না পেরে হতাশ সঙ্গিনী সীতাও। এই পরিস্থিতিতে মুখে কিছুই তুলতে চাইছে না তারা। ভালোবাসার দিনে দুজনের বন্দিদশা মেনে নিতে পারছে না আকবর-সীতা। প্রেমিকযুগল আসলে বেঙ্গল সাফারি পার্কের নতুন দুই অতিথি সিংহ। সোমবার তাদের আনা হয়েছে সুদূর ত্রিপুরার সিপাইজলা চিড়িয়াখানা থেকে। দুজনকেই টানা ২১ দিন রাখা হবে দুটি পৃথক খাঁচায়, কোয়ারেন্টাইনে।
ফলে ভালবাসার দিনে মন খারাপ বেঙ্গল সাফারির নয়া সদস্য আকবরের।ভালোবাসার দিনে কাছাকাছি নেই দুজনে। দুজনকে পাশাপাশি খাঁচায় বন্দি করে রাখা হলেও একে অপরকে দেখার জো নেই। তাই দুজনেই এদিন অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম খাবার খেয়েছে। অন্যদিকে, সীতাও তার সঙ্গীর জন্য দিনভর গর্জন করেছে। রাজ্য জু অথিরিটির সদস্য সচিব সৌরভ চৌধুরীর বক্তব্য, 'দুজনেই সুস্থ রয়েছে। খাবারও খেয়েছে। বেঙ্গল সাফারির বাকি সদস্যরাও ভালো আছে।'
আকবরের জন্ম ২০১৬ সালে। বাবা দুষ্মন্ত ও চিন্ময়ী সিপাহিজালা চিড়িয়াখানায় তিন শাবকের জন্ম দিয়েছিল। পরে তাদের নামকরণ করা হয়েছিল অমিতাভ বচ্চন ও ঋষি কাপুরের সিনেমার তিন চরিত্র অমর, আকবর ও অ্যান্টনি। সেই তিন শাবকের মধ্যে আকবরকে বেঙ্গল সাফারি পার্কের জন্য বেছে নেয় সেন্ট্রাল জু অথোরিটি ও রাজ্য জু অথোরিটি। বর্তমানে আকবরের বয়স সাত বছর। পাশাপাশি ত্রিপুরা চিড়িয়াখানাতেই জন্ম হয় সীতার। তার জন্ম ২০১৮ সালে। এখন সীতার বয়স পাঁচ বছর।
সোমবার দুপুরে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে এসে পৌঁছায় সিংহ জুটি। কিন্তু পার্কে আনার পরেই দুজনকে পৃথক পৃথক নাইট শেলটারে রাখা হয়েছে। সোমবার বিষয়টি দুজনের ওপর তেমন প্রভাব না ফেললেও মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি কিছুটা বদল হয়েছে। সাফারি পার্ক সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রথম দিন নির্বিঘ্নে কাটলেও মঙ্গলবার সকাল থেকেই মনমরা আকবর। শেলটারের এককোণে বসে থাকছে। খাবার দেওয়া হলে অনেকক্ষণ বাদে কাছে এসে খাচ্ছে। বসে বসে সাফারির কর্মীদের পর্যবেক্ষণ করছে।
অন্যদিকে, সীতা সকাল থেকেই শেলটারে অস্থির হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পার্কের কর্মীদের ধারণা, সঙ্গীর থেকে আলাদা হয়েই দুজনের স্বভাবে এই পরিবর্তন। অন্যদিকে, দুজনের স্বাস্থ্যের ওপর নিয়মিত নজর রাখছেন সাফারি পার্কের চিকিৎসকরা। খাবারের সঙ্গে বিভিন্ন প্রোটিন জাতীয় বস্তু দেওয়া হচ্ছে। আটটি সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে দুজনের ওপর নজর রাখা হচ্ছে।