Advertisment

'আয়া রাজ' আরজি কর হাসপাতালে! কবে মিলবে মুক্তি, প্রশ্ন রোগীদের

'আয়া রাজে'র অভিযোগ আরজিকরে।

author-image
Sayan Sarkar
New Update
আরজি করে দালাল চক্র, RG Kar Medical College Hospital, RG Kar, patients of rg kar, corruption in rg kar medical college hospital

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে থিকথিকে ভিড় রোগীদের

আয়াদের দৌরাত্ম থেকে দালাল রাজ একাধিক অভিযোগ কলকাতার অন্যতম সেরা হাসপাতাল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। জেলা থেকে আগত রোগী ও পরিজনদের অভিযোগ এমনটাই। সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ বিস্তর। এই তালিকায় উঠে এল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নামও। লক্ষ্মীপুজোর আগেই বাড়িতে বাজি ফাটাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে যান, শান্তিপূরের গোপাল কৃষ্ণ দাস। বেশ কয়েকদিন কল্যাণীর জওহরলাল নেহেরু হাসপাতালে চিকিৎসার পর তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

Advertisment

রোগীর পরিবারের অভিযোগ, "প্রতিদিন ৪০০ টাকা করে আয়াদের দেওয়ার মত ক্ষমতা না থাকলেও ধার দেনা করে সেই টাকা জোগাড় করে আয়া রাখতে হচ্ছে। অথচ তাঁরা সেভাবে রোগীর কোনও সেবা যত্ন করছেন না। পাশাপাশি পাঁজরের ও শিরদাঁড়ার হাড় ভেঙে যাওয়ায় রোগীর হাঁটা চলাও প্রায় বন্ধ। ধরে ধরে এক্স রে, এমআরআই করাতে নিয়ে যেতে হচ্ছে"।

পরিবারের বিষ্ফোরক অভিযোগ, " হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী যাঁরা ওনাকে ধরে ধরে আনছেন প্রতি ক্ষেত্রেই তাঁদের দিতে হচ্ছে মাথাপিছু ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। একই সঙ্গে প্রেসক্রাইব করা ওষুধও হাসপাতালে অমিল এমনই দাবি রোগীর পরিজনদের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাইরে থেকে ওষুধ কিনে আনতে হচ্ছে"। সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা পাওয়ার জন্য কেন পদে পদে টাকা গুনতে হবে প্রশ্ন তুলেছেন হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগীদের। অনেক সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালে ফল হিতে হয় বিপরীত দাবি রোগীর পরিজনদের।

বনগাঁ থেকে হাসপাতালে এসেছেন শিপ্রা ধর। তাঁর এক আত্মীয় ভর্তি হয়েছে এই হাসপাতালেই। তাঁর কথায়, "জেলা মহকুমা হাসপাতাল থেকে কথায় কথায় রোগীদের রেফার করা হয়। আর জি কর হাসপাতালে এসে প্রতি ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে আমাদের। জটিল ক্ষেত্রে অনেক সময়ই দেখা মেলে না অভিজ্ঞ চিকিৎসকের। ভরসা রাখতে হয় জুনিয়র চিকিৎসকদের ওপর"।

শিপ্রাদেবীর আরও অভিযোগ, "রাতে থাকার ক্ষেত্রে ঝাঁ চকচকে রাত্রিনিবাসের ব্যবস্থা থাকলেও তা রোগীর পরিজনদের জন্য খোলা থাকে না। পলিথিন পেতে রাত্রিনিবাসের সামনেই রোগীর পরিজনরা রাত কাটান যেটা কর্তৃপক্ষে নজরে আসে না"। হাসপাতালের অপরিছন্ন পরিবেশ নিয়েও রোগীদের মধ্যে বিস্তর অভিযোগ। হাসপাতালে আগত রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে খাওয়ার জলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই, পাশাপাশি বাথরুম ব্যবহারের অযোগ্য।

বাবার জন্য ইসিজির লাইনে প্রায় তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে ক্যানিংয়ের বাসিন্দা, সুরজিৎ দাস, রীতিমতো চোখে মুখে হতাশা! তাঁর কথায়, চিকিৎসক ইসিজি করার কথা বলার পর প্রায় দিন সাতেক পরে আজ তারিখ পেয়েছি, আক্ষেপের সঙ্গে তিনি জানান, "সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে কখন ইসিজি হবে, আর কখন রিপোর্ট হাতে আসবে! একজন হার্টের রোগীকে যদি এতটা সময় অপেক্ষা করতে হয় তাহলে কীসের পরিষেবা"!

যদিও এই অভিযোগ কোনওমতেই মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের তরফে সাফ জবাব, "স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে কোন ধরণের গাফিলতি বরদাস্ত করা হয়না। অভিযোগ এলেই তৎক্ষণাৎ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়"। কোনও বিষয়ে রোগীদের যে কোনও অভিযোগে হাসপাতাল কতৃপক্ষের দ্বারস্থ হওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

kolkata news RGKar medical college & hospital
Advertisment