তল্লাশি চালিয়ে ইতিমধ্যেই এই রাজ্যের শাসক দলের একাধীক নেতা ও মন্ত্রীদের গুপ্তধন উদ্ধার করেছে সিবিআই ও ইডি। মিলেছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা, অলংকার সহ অনেক কিছু। আর এবার বর্ধমান থানার পুলিশের নাকা তল্লাশিতে শুক্রবার রাতে এক চালকল ব্যবসায়ীর চারচাকা গাড়ির ডিকি থেকে উদ্ধার হল লাখ লাখ টাকা। ওই টাকা ও গাড়ি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি পুলিশ চালকল ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, 'ধৃতের নাম অচিন্ত্য কুমার যশ। তিনি রাইস মিলের মালিক। তার কাছ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে।' এদিকে এই ঘটনায় বর্ধমানের চালকল ব্যবসায়ী মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পড়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ পুলিশ বর্ধমান-আরামবাগ রোডের তেলিপুকুর মোড়ে নাকা তল্লাশি চালাচ্ছিল। ওই সময়ে কালো রঙের একটি চারচাকা গাড়ি সেখানে পৌছাতেই পুলিশ গাড়িটি দাঁড় করায়। গাড়িতে দু’জন মহিলা সহ পাঁচ জন ছিলেন। গাড়ির ডিকি খুলে পুলিশ তল্লাশি চালাতে গেলে পুলিশ ডিকিতে কয়েকটি ব্যাগ দেখতে পায়। ওই ব্যাগ গুলিতে টাকা ভর্তি রয়েছে দেখেই পুলিশ গাড়ি সহ যাত্রীদের আর যেতে না দিয়ে আটকে রাখে। এত টাকার উৎস কী তা জানার জন্য পুলিশ গাড়ির সকল আরোহীকে বর্ধমান থানায় নিয়ে যায়। রাতে ডিএসপি ট্রাফিক (২) রাকেশ চৌধুরীর জানান, নাকা তল্লাশির সময় ওই গাড়ি থেকে ব্যাগ ভর্তি টাকা উদ্ধার হয়। গাড়িতে থাকা সবাইকে বর্ধমান থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে,অচিন্ত্য যশ খণ্ডঘোষ ব্লকের উখরিদ অঞ্চলের শরঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। খণ্ডঘোষের বাদুলিয়া ও রায়নায় অচিন্ত্য যশের একাধিক চালকল রয়েছে। বর্ধমানের রামকৃষ্ণ পল্লী এলাকাতেও ব্যবসায়ী বাড়ি রয়েছে। পাশাপাশি বর্ধমান শহরে বহুজাতিক সংস্থার একটি পোষাকের শোরুমও আছে ব্যবসায়ী অচিন্ত্য যশের। তাঁর ভাই একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক বলেও জানা জানা গিয়েছে। কোনও নথি ছাড়া মোটা অংকের নগদ টাকা গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পুলিশ ব্যবসায়ী অচিন্ত্য যশকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার ধৃতকে পেশ করা হয় বর্ধমান আদালতে ।
ধৃতের আইনজীবী পার্থ হাটি এদিন বলেন, 'সন্দেহের বশে পুলিশ জেনারেল ডাইরি করে আমার মক্কেলকে গ্রেফতার করে। শনিবার তাকে আদালতে তোলা হতেই বিচারক জামিন দেন। আমরা পুলিশকে সব নথি জমা দেব।' তবে বিচারক জামিন দিলেও টাকা বা গাড়ি এ দিন ওই ব্যবসায়ী ফেরত পাননি। আদালত পুলিশের কাছে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে। আগামী ৭ নভেম্বর সেই রিপোর্ট পুলিশকে আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে।