/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/02/School.jpg)
বিননগর হাইস্কুলে ভাঙনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি। ছবি: মধুমিতা দে
গঙ্গার ভাঙন কেড়েছে ভিটে। সরকারি স্কুলগুলিই ছিল এতদিন থাকার একমাত্র ঠিকানা। এবার সেই ঠিকানা থেকেও সরে যেতে চাপ দেওয়ার অভিযোগ। কিন্তু যাবেন কোথায়? ঘোর চিন্তায় মালদহের কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের বেশ কিছু পরিবার। স্থানীয় বিধায়ক অবশ্য তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন। বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত দুর্গতরা স্কুলগুলিতেই থাকতে পারবেন বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
এলাকারই বেশ কয়েকটি সরকারি স্কুলে বাস করছে পরিবারগুলি। তবে করোনার প্রকোপ কমতেই বড়দের স্কুল চালু হয়ে গিয়েছে। বুধবার থকে প্রাথমিকেও ক্লাস চালু হচ্ছে। স্কুল কর্তৃপক্ষগুলির তরফেই এবার স্কুল ছাড়তে চাপ দেওয়া হচ্ছে পরিবারগুলিকে, উঠছে এমনই অভিযোগ। তাই পুনর্বাসনের দাবি তুলেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
মালদহের কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় নদী ভাঙন জ্বলন্ত একটি সমস্যা। গত দু'বছরে ভাঙনের জেরে বিঘের পর বিঘে জমি নদী-গ্রাসে গিয়েছে। শতাধিক পরিবার ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছে। নিকটবর্তী সরকারি স্কুলে কোনওমতে বাস করছে পরিবারগুলি।
কিন্তু করোনার সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতেই সরকারি স্কুলগুলিও খুলছে। তাতেই চরম সমস্যায় পড়েছেন কালিয়াচকের বিননগর ১ নং পঞ্চায়েতের বহু পরিবার। অভিযোগ, তাঁদের এখন স্কুল ছাড়তে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভিটে হারিয়ে চরম দুর্দশায় পড়েছে পরিবারগুলি। পঞ্চায়েত এবং স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
উল্লেখ্য, গত বছর কালিয়াচক ৩ নং ব্লকের বিননগর ১ পঞ্চায়েতে গঙ্গা নদীর পাড় ভাঙন বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। এরপরই এলাকার শ'পাঁচেক বাসিন্দা বিননগর গার্লস স্কুল, বীরনগর প্রাইমারি স্কুল, চামাগ্রাম হাইস্কুল-সহ আরও বেশ কয়েকটি সরকারি স্কুলে আশ্রয় নেন। প্রায় দু'বছর ধরে করোনার সংক্রমণের জেরে স্কুল বন্ধ ছিল। সেখানেই এতদিন আশ্রয় নিয়েছিল ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক পরিবার। এবার তাঁরা ঘোর চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন- গ্রুপ ‘ডি’-‘সি’ নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে CBI, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
বিননগর হাইস্কুলের আশ্রয় নেওয়া শোভারানি মণ্ডল, মমতাজ বিবিরা জানান, গত বছর বন্যা এবং ভাঙনের জেরে তাঁদের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। তাই এই স্কুলবাড়িতে তাঁরা এতদিন আশ্রয় নিয়েছিলেন। এখনও বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করেনি প্রশাসন। এই অবস্থায় এবার স্কুলগুলি খুলে যাওয়ায় তাঁদের সরে যেতে বলা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে, বিননগর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান সীমা হালদার জানান, পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কয়েকটি স্কুলে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি রয়েছে। তাঁদের এখনও পর্যন্ত বিকল্প পুনর্বাসন দেওয়া যায়নি। ওই সব পরিবারগুলির জন্য যাতে দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা যায়, সে ব্যাপারে ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
বৈষ্ণবনগরের তৃণমূলের বিধায়ক চন্দন হালদার জানান, করোনার জন্য এতদিন বিভিন্ন স্কুল বন্ধ ছিল । তবে রাজ্য সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আপাতত এলাকারই শিমুলতলা হাই মাদ্রাসায় পড়ুয়ারা ক্লাস করবে। এই মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি যে স্কুলগুলিতে রয়েছেন তাঁরা সেখানেই থাকবেন। তাঁদের বিকল্প থাকার জায়গার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।