/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/02/chitfund-cover.jpg)
এসএন ব্য়ানার্জী রোডে মঙ্গলবার অবস্থান বিক্ষোভ চলছে চিটফান্ড এজেন্ট ও আমানতকারিদের।
ধর্না হলো, প্রত্যাহারও হলো। কিন্তু রাজ্য বনাম কেন্দ্রের, বা মমতা বনাম সিবিআইয়ের 'ধর্মযুদ্ধে' যাঁদের প্রায় কোনো উল্লেখই হলো না, অথচ যাঁদের স্থান চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির প্রাণকেন্দ্রে, সেই চিট ফান্ড সংস্থার একদা এজেন্ট ও আমানতকারিরা আরেকটু হলেই আরেক ধরনের 'কেলেঙ্কারি' করে ফেলেছিলেন আর কী! ভাগ্যিস তাঁদের কথা বেশি কেউ শুনতে পান নি।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাসভবনে সিবিআই হানার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্নার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ধর্না মঞ্চের সামনেই রাস্তায় বসে পড়ে অবস্থান-বিক্ষোভ করল অল বেঙ্গল চিটফান্ড সাফারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। কার্যত মমতার ধর্না নিয়ে ব্যস্ত কলকাতা পুলিশের চোখে ধুলো দিয়েই বৌবাজার থেকে মিছিল করে কয়েকশো চিট ফান্ড এজেন্ট ও আমানতকারি মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চের দিকে এগোতে থাকেন। ব্যাপার বুঝতে পেরে হকচকিয়ে যায় পুলিশ। অবশেষে এস এন ব্যানার্জী রোডে নিউমার্কেট থানা থেকে একটু দূরেই পুলিশ মিছিলের পথ আটকে দেয়। পরে ধর্না মঞ্চে কর্তব্যরত বিশাল বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।
আরও পড়ুন: কে লেখে মমতার চিত্রনাট্য?
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/02/chit-fund-agi-image-759.jpg)
কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাসভবনে সিবিআই হানার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্নার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ধর্না মঞ্চের সামনেই রাস্তায় বসে পড়ে অবস্থান-বিক্ষোভ করল অল বেঙ্গল চিটফান্ড সাফারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন#MamataVsCBI#MamataBanerjee#ChitFundpic.twitter.com/5c0YQd5ODN
— IE Bangla (@ieBangla) February 6, 2019
সারদা কান্ডের তদন্তে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে সিবিআই হানার প্রতিবাদে রবিবার ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ধর্নার তৃতীয় দিনে বিক্ষোভ-মিছিল করার প্রস্তুতি নেন চিট ফান্ড আন্দোলনকারিরা। অত্যন্ত গোপনে তাঁরা বৌবাজার মোড়ে জমায়েত হন। শোনা যাচ্ছে, এই মিছিল নিয়ে কলকাতা পুলিশের কাছে আগাম কোনও খবর ছিল না। পুলিশকর্তারা ব্যস্ত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ধর্না মঞ্চের নিরাপত্তা নিয়ে।
সংগঠনের সভাপতি রূপম চৌধুরী বলেন, "পুলিশ সাধারণত অনুমতি দেয় না, এদিনও আমাদের মিছিলের কোনও অনুমতি ছিল না। আমরা বৌবাজারে ট্রাফিক সিগন্যালের কাছে ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলাম। পুলিশকে ধোঁকা দিতেই এই পন্থা নিয়েছি। সিগন্যাল সবুজ হতেই মিছিল করে ধর্মতলার দিকে এগোতে থাকি। ওয়েলিংটন মোড় অবধি পুলিশের কোনও বাধা পাই নি। পুলিশ আমাদের নিউমার্কেট থানার কাছে আটকে দেয়। আমরা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকি। প্রায় ঘণ্টাখানেক চলে আমাদের কর্মসূচি।"
আরও পড়ুন: বিজেপিতে ভারতী ঘোষ, দলে যোগ দিয়েই মমতার প্রতি আক্রমণাত্মক প্রাক্তন আইপিএস
চিট ফান্ডের এজেন্ট ও আমানতকারিরা রাস্তায় বসে পড়ায় এস এন ব্যানার্জী রোডে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে জনা ১৫ পুলিশকর্মী অবস্থান সামলানোর পক্ষে যথেষ্ট ছিলেন না। এই অবস্থানের খবর পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রীর ধর্না মঞ্চে কর্তব্যরত পুলিশকর্তাদের কাছে। সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশাল পুলিশ বাহিনী ছোটে অবস্থান তুলতে। এদিকে যখন ধর্না মঞ্চে অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, ওদিকে তখন এস এন ব্যানার্জী রোডে চিটফান্ডের অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও টাকা ফেরতের দাবীতে বিক্ষোভ চলছে।
চিটফান্ড এজেন্ট ও আমানতকারিদের দাবি, "কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে টাকা ফেরত ও জুনিয়র এজেন্টদের নিরাপত্তা দিতে হবে।" তাঁদের দাবী, "গত সাড়ে পাঁচ বছরে ৩২১ জন চিটফান্ড কান্ডে আত্মহত্যা করেছেন। চারজন খুন হয়েছেন।" দোষীদের গ্রেপ্তারি এবং মৃতদের পরিবারবর্গকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবী জানিয়েছে এই সংগঠন। অবস্থান বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন অমিতা বাগ, মহাদেব কোলে। রূপমবাবুর দাবি, "মুখ্যমন্ত্রী অভিযুক্তদের আড়াল করতে ধর্না মঞ্চে বসেছেন।" তিনি জানিয়ে দেন, ফের কলকাতার রাস্তায় বড় ধরনের আন্দোলনে নামবে তাঁদের সংগঠন।