UP Sadhus Assaulted In Bengal: উত্তরপ্রদেশ থেকে গঙ্গাসাগরের মেলায় যাওয়ার পথে পুরুলিয়ার গৌরাঙ্গডি গ্রামে হামলার শিকার হয়েছেন ৩ সাধু। আক্রান্ত তাদের রাঁধুনি ও গাড়ির চালকও। শনিবার বিজেপির নেতা অমিত মালব্য এক্স করে এই ঘটনা প্রাকাশ্যে আনেন। এরপরই রাজ্য রাজনীতিতে উত্তপা ছড়াতে থাকে। হামলার ঘটনায় ১২ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কাশীপুর থানার পুলিশ। পুরুলিয়ার ঘটনার নিন্দায় মুখর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। সাধুদের উপর হামলার ঘটনার জন্য মমতা সরকারকে দুষেছেন তিনি। দায়ী করেছেন রাজ্য সরকারের 'তোষণ' রাজনীতিকে। পাল্টা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা উত্তরপ্রদেশের নানা উদাহরণ টেনে বিজেপিকে নিশানা করেছেন।
ঘটনা ঠিক কি ঘটেছে?
পুলিশ সূত্রে জানা খবর, উত্তরপ্রদেশের বেরিলি থেকে গঙ্গাসাগর আসছিলেন ওই সাধুরা। পুরুলিয়ার কাশিপুর থানা এলাকার গৌরাঙ্গডি গ্রামে তিন নাবালিকাকে দেখে গাড়ি থামিয়ে পথের খোঁজ নিচ্ছিলেন। সাধুদের ভাষা বুঝতে না পেরে ঘাবড়ে যায় ওই তিন কিশোরী। ভয় পেয়ে চিৎকার করে লোক জোগাড় করে। এরপরেই নারী পাচারকারী সন্দেহে সাধুদের মারধর শুরু করে স্থানীয়রা। তাঁদের গাড়িটিও ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে কাশিপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। উন্মত্ত জনতার হাত থেকে আক্রান্ত সাধুদের উদ্ধার করে। থানায় নিয়ে আসা হয় তাঁদের।
আরও পড়ুন- Anurag Thakur: ‘যা দেশের কোথাও হয় না, তা বাংলায় হয়’, রাজ্যকে তুলোধনা অনুরাগের
আক্রান্ত সাধুর দাবি-
থানায় বসে এক আক্রান্ত সাধু বলেন, 'আমরা উত্তরপ্রদেশের মানুষ। গঙ্গাসাগর যাচ্ছিলাম। রাস্তা জিজ্ঞেস করতেই আমাদের ঘিরে ফেলে গ্রামের মানুষ। ওরা কী বলছিল বুঝতে পারিনি। তবে আমরা হাত জোড় করে নিজেদের অসহায়তার কথা বোঝাতে চেয়েছি। ওরা তা বোঝেনি। কীসব হয়ে গেল বুঝতেই পারছি না। পুলিশ এসে না পৌঁছলে ওরা আমাদের মেরেই ফেলত।'
বিজেপি নেতাদের মন্তব্য-
বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এক্স হ্যান্ডেল পোস্টে একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, 'পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ সাধুদের গণপিটুনি থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ, বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহতো তাদের উদ্ধার করেছেন, সম্মানিত করেছেন এবং তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। আমরা তাঁদের নিরাপদে ফেরার ব্যবস্থা করেছি। স্থানীয়রা আমাদের বলেছেন, সিভিক ভলান্টিয়ার ও তৃণমূলের গুন্ডা আনোয়ার শেখ এই হামলার পিছনে রয়েছে৷ এটা স্পষ্ট যে, তদন্তে কিছুই বেরবে না, কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেখ শাহজাহান এবং আনোয়ারদের মত গুন্ডাদের উপর ভর করেই টিঁকে আছেন।'
আরও পড়ুন- নামী দামী বেসরকারি স্কুলও ভাবতেই পারবে না! তাকলাগানো কীর্তি বাংলার এই সরকারি স্কুলের
পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতর দাবি, 'পশ্চিমবঙ্গে সাধুরা আর নিরাপদ নন। এখানে এখন গুন্ডারাজ চলছে। গেরুয়া পোশাকে সাধুদের দেখলেই মারধর করছে তারা। কোনও কারণ ছাড়াই উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা এই সাধুরা গণরোষের শিকার হলেন। তৃণমূলের গুন্ডারাই মানুষকে তাতিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি করল।'
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নিন্দা-
কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বললেন, 'এমন বাতাবরণ কেন তৈরি হচ্ছে? তুষ্টিকরণের রাজনীতি এই ধরনের বাতাবরণ তৈরি করছে। রাজ জন্মভূমির শিলান্যাসের সময় বাংলায় কার্ফুর মতো পরিস্থিতি তৈরি করে দেওয়া হয়। হিন্দুদের আনন্দে সামিল হতে দেওয়া হয় না। আর এখন সাধুদের মারপিট করে, তাঁদের হত্যার চেষ্টা পর্যন্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে আসছে। রাজ্য সরকার চুপচাপ বসে দেখা ছাড়া আর কিছু করছে না। সংবাদমাধ্যম যখন বিষয়টি তুলে ধরে, তখন গিয়ে তদন্ত করছে। প্রশ্ন উঠছে, তুষ্টিকরণের রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? এই হিন্দু-বিরোধী চিন্তাভাবনা কেন তৈরি হচ্ছে?'
তৃণমূলের পাল্টা তোপ-
তৃণণূলের রাজ্য সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, 'যে ঘটনা হয়েছে তা একেবারেই অনভিপ্রেত। পুলিশ গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে। কেন এমন ঘটনা ঘটল সেই কারণ পুলিশই খুঁজে বার করবে। বেজেপি আসরে নেমে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে।'
আরও পড়ুন- দুরন্ত সাফল্য! সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব নজির! অনন্য কীর্তির নতুন মাইলফলক ছুঁল বাংলার ছেলে!