পুরো নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ। বৈজ্ঞানিক নাম হিপোসটোমাস প্লেকোসটোমাস। মূলত বাড়ির অ্যাকোরিয়ামের শোভা বাড়াতেই বিশেষ প্রজাতির এই মাছ অনেকে রেখে থাকেন। তবে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ডোবা-নালা বা অন্য জলাশয়েও হামেশাই দেখা মেলে এই মাছের। এবার অদ্ভুতদর্শন এই মাছের দেখা মিলল দিঘা ঘেঁষা রামনগরে।
দ্রুত বংশ বিস্তারকারী এই মাছটি জলজ পোকামাকড় ও শ্যাওলার পাশাপাশি ছোট মাছ এবং মাছের পোনা খেয়ে থাকে। তাছাড়া সাকার ফিশের পাখনাও খুব ধারালো হয়। এই ধারালো পাখনার আঘাতে সহজেই অন্য মাছের দেহে ক্ষত তৈরি হয় এবং পরবর্তীতে পচন ধরে সেগুলো মারা যায়। তখন সেই মরা মাছই এদের শিকার হয়।
পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর ১ নম্বর ব্লকের সমুদ্র উপকূলবর্তী পাদিমা ১ অঞ্চলের মেদিনীপুর গ্রামের একটি চাষের খেত থেকে ধরা পড়েছে এই মাছ। এমন বিচিত্র-দর্শন মাছ জালে তোলার পরেই তা দেখতে এলাকায় ভিড় জমে যায়। মৎস্য গবেষকরা জানিয়েছেন, সাকার ফিশ প্রচুর পরিমাণে খাবার খেতে পারে। এদের সঙ্গে দেশীয় প্রজাতির মাছের খাদ্যের জন্য তীব্র প্রতিযোগিতাও হয়। তবে মৎস্য বিশারদদের আশঙ্কা, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বিশেষ প্রজাথির এই মাছ।
এদিকে, বিশেষ প্রজাতির এই মাছ নিয়ে ভারী সমস্যায় পড়েছেন মাছ চাষিদের একটি বড় অংশ। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের জলাশয়গুলিতেও এই মাছ ঢুকে পড়ছে। যার জেরে অন্য মাছের উৎপাদন জোর ধাক্কা খাচ্ছে। সাকার মাউথ ক্যাটফিশ অন্য মাছের পোনা খেয়ে ফেলছে। যদি সাকার মাউথ ক্যাটফিশ প্রচুর মাত্রায় জন্ম নেয় তবে অন্য দেশীয় প্রজাতির মাছের জোগানে বড়সড় ভাঁটা আসতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন।
আরও পড়ুন- টুইট-তোপ’ই বুমেরাং! শেষ পর্যন্ত পিছু-ই হটলেন সিপিআইএমের মহম্মদ সেলিম
জানা গিয়েছে, সাকার ফিশের প্রভাবে মায়ানমার ও আরব আমিরাতের মৎস্য চাষিরাও ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন।
মৎস্য দফতরের আধিকারিকরা এই প্রজাতির মাছ সম্পর্কে জানিয়েছেন, সাধারণত এই ধরনের মাছ অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা হয়। কোনওভাবে জলাশয়ে ঢুকে পড়েছে এরা। রামনগরের মেদিনীপুর গ্রামের এক বাসিন্দা মাঠে জাল ফেলেছিলেন। বৃষ্টিতে মাঠে জমা জলে মাছ ধরতেই জাল ফেলেছিলেন তিনি। তাঁর জালেই দু কিলোরও বেশি ওঝনের বিশেষ প্রজাতির এই মাছ ধরা পড়েছে।