টানা তিন বছর তিনি কাটিয়েছেন মণিপুরে। বর্তমানে হিংসার সঙ্গে সেই মণিপুর কোথাও যেন ঠিক মানানসই নয়। ফিরে আসুক হিংসা কবলিত মণিপুরে শান্তি। অশান্তির মাঝে সেই শান্তিপ্রিয় পাহাড়ি রাজ্যের ছবিটা বারে বারে ঘুরে ফিরে এসেছে মনের আঙিনায়। সেই থেকে আসে পুজোর থিম ভাবনা। শান্তি ফিরুক মণিপুরে এমনই বার্তা দিতে সল্টলেক এফসি ব্লকের দুর্গাপুজোর থিম ভাবনায় এবার উঠে আসতে চলেছে ‘মণিপুরের মা’।
এফ ফি ব্লকের বাসিন্দা পলাশ দাস বলেন, “আমি পুরো লকডাউন সময়টা মণিপুরে কাটিয়েছি এবং ২০২১ সালে ফিরে এসেছি। কয়েক মাস আগে আমি সুন্দর শান্তিপ্রিয় রাজ্যকে চোখে দেখেছি। জীবনের তিনটি বছর কাটিয়েছি, আজ যে অশান্তির ছবি সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে সামনে আসছে তার সঙ্গে সেদিনের মণিপুরের কোন মিল নেই। রাজ্য জুড়ে অনাচার, চরম বর্বরতা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ভারতের মান ক্ষুন্ন করেছে। আমাকে যখন তাই যখন নীলাঞ্জন আমাদের পূজার জন্য একটি থিম ভাবনার কথা বলেন, আমি মণিপুরের বাইরে কিছুই ভাবতে পারিনি” ।
আশিস পালের ভাস্কর্যে আদিবাসী পোশাকে সাজানো হবে দেবী দুর্গাকে। প্যান্ডেলের বাইরে, প্রবেশদ্বারের দুপাশে একজন করে কুকি মহিলা এবং একজন মেইতি পুরুষ দাঁড়িয়ে থাকবেন, উভয়ের হাতে থাকবে ভারতীয় পতাকা”। থিমের সঙ্গে মিল রেখে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হবে। ইতিধ্যেই মণিপুরি ব্যান্ডের সঙ্গে সারা হয়ে গিয়েছে আলোচনাও।
মণ্ডপটি সাজানো হচ্ছে, বাঁশের খুঁটি এবং বাঁশের টুকরো দিয়ে। যা দেখতে হবে মণিপুরের ঐতিহ্যবাহী গ্রামের কুঁড়েঘরের মত। পলাশের কথা, “ মনিপুরে থাকা আমার বন্ধুরা আমাকে ছবি পাঠিয়েছে যার ভিত্তিতে আমরা কাঠামোর ডিজাইন করছি। সেখানকার সমাজ মাতৃতান্ত্রিক। তারা যে রঙিন আলপনা ব্যবহার করেন আমরাও তাই ব্যবহার করব।” সর্বোপরি, সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত রাজ্যে শান্তির জন্য প্রার্থনা করবেন এফসি ব্লকের পুজোর সঙ্গে জড়িত সকলেই।
আবাসিক সমিতির সম্পাদক দেবরাজ দাস জানিয়েছেন, “ নগ্ন প্যারেডের যে ভিডিও ভাইরাল হয় মণিপুরে এবং তা যেভাবে বিশ্বের সামনে ভারতের মাথা হেঁট করে দিয়েছে তার ভিত্তিতেই আমাদের এই পুজ থিমের ভাবনা। যার মাধ্যমে আমরা বার্তা দিতে চাই শান্তি ফিরুক মণিপুরে”।