তীব্র গরম থেকে অল্প বৃষ্টিতে সদ্য স্বস্তি পেয়েছে শহর কলকাতা। তার মধ্যেই শহরের উপকণ্ঠ সল্টলেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আশ্রয় হারালেন শতাধিক ঝুপড়িবাসী। সল্টলেক এলাকার ফাল্গুনি বাজারের কাছেই বেশ কয়েকটি আবাসন রয়েছে। আবার, তার পাশেই ছিল ঝুপড়িও। তাতেই আগুন লাগে। একের পর এক বিস্ফোরণে পরপর ঝুপড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধে ৭টা ১৫ নাগাদ আচমকা এই অগ্নিকাণ্ডে যখন বাসিন্দারা দিশাহারা, সেই সময়েই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খবর দেওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পরে এসেছেন দমকলকর্মীরা। তবে, সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দমকল দফতর। খোদ দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু নিজে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। আগুন নেভানোর জন্য আনা হয় দমকলের একের পর এক ১০টি গাড়ি। বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীও হাজির হন ঘটনাস্থলে। বিরাট দমকলবাহিনী ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টাতেও আগুন নেভাতে ব্যর্থ হয়। দমকলকর্মীরা মনে করছেন, ঝুপড়ির মধ্যে থাকা একের পর এক গ্যাস সিলিন্ডার-সহ দাহ্য পদার্থ ছিল। তার ফলেই আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে। বিস্ফোরণগুলো গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেই ঘটেছে বলেই প্রাথমিকভাবে দমকলকর্মীরা মনে করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই এলাকায় শতাধিক ঝুপড়ি ছিল। প্রায় সবক'টিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বহুতলগুলোরও। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এলাকাটি সংকীর্ণ হওয়ায় দমকলের মাত্র চারটি গাড়ি সরাসরি আগুন নেভানোর কাজ করতে পেরেছে। বাকিগুলো আবাসনের পাঁচিলের বাইরে থেকে হোসপাইপের মাধ্যমে জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়েছে। তার মধ্যে ভালো খবর বলতে কোনও বাসিন্দা এই অগ্নিকাণ্ডে হতাহত হননি।
আরও পড়ুন- দিল্লি দরবারে আবার পালটি ‘সাবালক’ মুকুলের, কেন? নেপথ্যে অন্তহীন চর্চা……..
স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশে স্থানীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে দাঁড়িয়েছেন বিধাননগরের মেয়র। তিনি জানান, আচমকা আশ্রয়হীন হয়ে পড়া এই ঝুপড়িবাসীদের রাতে কমিউনিটি হলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসন তাঁদের খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা করেছে। আগুন নিভলে রিপোর্ট পাওয়ার পর আশ্রয়হীনদের সরকারি নিয়মমাফিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে। দমকলমন্ত্রী জানিয়েছেন, দমকলকর্মীরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ঝুপড়িগুলো থেকে না-ফাটা সিলিন্ডার বের করে এনেছেন। বিস্ফোরণ যাতে না-ঘটে, সেজন্য ওই সব সিলিন্ডারগুলোকে ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করেছেন। তবে, শুরুর দিকেই পরপর পাঁচ থেকে সাতটি গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে গিয়েছিল। তার ফলেই আগুন এত দ্রুত ছড়িয়েছে বলেই সুজিত বসু জানিয়েছেন।