গত শুক্রবার সন্দেশখালিতে দুষ্কৃতীদের হামলায় মৃত্যু হয় বিশ্বজিৎ মাইতির। শোকে মুহ্যমান তার পরিবার। সন্দেশখালির মৃত সিভিক পুলিশের বাবার সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আশ্বস্ত করেন দোষীদের ধরতে প্রশাসন মাইতি পরিবারের পাশে রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢোল খালিতে গিয়ে নিহতের পরিবারের হাতে রাজ্য সরকারের দেওয়া ক্ষতিপূরণের দু’লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন বসিরহাটের পুলিশ সুপার কংঙ্করপ্রসাদ বাড়ুই। সঙ্গে ছিলেন, সন্দেশখালি থানার পুলিশ আধিকারিক সিদ্ধার্থ ঘোষ ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা সত্যজিৎ সান্যালও।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বিশ্বজিতের বাবা গৌর মাইতি বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী ফোনে আমার ছোট ছেলেকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ক্ষতিপূরণ বাবদ দু’লক্ষ টাকার চেক পাঠিয়েছেন। এছাড়াও দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে বলেও তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন।' মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপে খুশি গৌরবাবু।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী মমতার কথার ভাঁজ বুঝতে চান রাজ্যপাল ধনখড়, ফের সংঘাত?
এর আগে অবশ্য ছেলের মৃত্যু জন্য পুলিশকেই দায়ী করেছিলেন মৃত সিভিক পুলিশ বিশ্বজিতের বাবা। তিনি বলেছিলেন ‘পুলিশ সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে গেলে আমার ছেলেকে বাঁচাতে পারতো। কিন্তু, জখম অবস্থায় ওকে তিন ঘন্টা ফেলে রাখা হয়েছিল। পুলিশি গাফিলতিই আমার ছেলের মৃত্যুর কারণ।’ সেই অভিযোগ নিয়ে অবশ্য এদিন আর কথা বলেননি গৌর মণ্ডল।
আরও পড়ুন: ‘কোমরে তলোয়ার রাখুন’, হুঁশিয়ারি অভিনেত্রী-রাজনীতিক কাঞ্চনার
উত্তর ২৪ পরগণার সন্দেশখালির খুনলা এলাকার পোলপাড়া সিথিলিয়া গ্রামে শুক্রবার রাতে পুজোর অনুষ্ঠান ঘিরে দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতী কেদার সর্দার ও বিধান সর্দারের মধ্যে গোলমাল বাধে। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সন্দেশখালি থানার সাব ইন্সপেক্টর অরিন্দম হালদার ও তাঁর তিন সহকর্মী। দুষ্কৃতীরা পুলিশকে লক্ষ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। গুলিতে জখম হন সন্দেশখালি থানার এসআই অরিন্দম হালদার। তাঁর হাতে ও পেটে গুলি লেগেছে বলে খবর। ভিলেজ পুলিশ বিশ্বজিৎ মাইতিরও পেটে গুলি লাগে। পরে কলকাতার হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়ে যায় রাজনীতি। একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে থাকে তৃণমূল ও বিজেপি। উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অভিযোগ করেন, ‘একটি অনুষ্ঠান চলছিল গ্রামে। সেখানে গিয়ে হামলা চালিয়েছে বিজেপির দুষ্কৃতীরা।’ রাজ্যের অপর এক মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, ‘এই দুষ্কৃতীরা আগে সিপিএম করত, বর্তমানে বিজেপির হয়ে কাজ করছে। প্রশাসনের হাত থেকে দোষীরা ছাড় পাবে না।’ সন্দেশখালির ঘটনার জন্য পাল্টা রাজ্যের শাসক দলকেই দায়ী করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।