CBI In Investigation Of Sandeshkhali Cases: আদালতের নজরদারিতে এবার সন্দেশখালির ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই। সন্দেশখালি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মোট পাঁচটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। সেইসব মামলার শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার সন্দেশখালি কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সন্দেশখালি নিয়ে জনস্বার্থ ও স্বতঃপ্রণোদিত মামলা, দু'টি ক্ষেত্রেই সিবিআই-কে সিট গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের স্পষ্ট নির্দেশ-
- সিবিআই-কে পোর্টাল তৈরি করতে হবে। এছাড়া, সিবিআইয়ের চালু করা ইমেল আইডির মাধ্যমে অভিযোগ জানানো যাবে। অভিযোগকারীদের গোপনীয়তা বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ।
- জমি দখল, ধর্ষণ, চাষের জমিকে ভেড়িতে পরিবর্তন করা সহ সব অভিযোগের তদন্ত করবে সিবিআই।
- পুলিশ তদন্তের স্বার্থে সিবিআই-কে সহায়তা করবেপুলিশ তদন্তের স্বার্থে সিবিআই-কে সহায়তা করবে।
- আদালতের নজরদারিতে হবে তদন্ত।
- স্পর্শকাতর এলাকায় ১৫ দিনের মধ্যে এলইডি আলো, সিসিটিভি বসাতে হবে, বসাতে হবে।
- সিসিটিভি এবং এলইডি আলোর খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার।
- প্রয়োজনে যে কোনও ব্যক্তি, সংস্থা, সরকারি কর্তৃপক্ষ, পুলিশ কর্তৃপক্ষ, এনজিও-সহ এ বিষয়ে আগ্রহী যে কোনও ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য এবং মতামত নিতে পারবে সিবিআই।
- মামলার সব পক্ষকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সিবিআইয়ের কাছে সব অভিযোগ জমা দিতে হবে।
- সন্দেশখালি এলাকায় সিবিআইয়ের চালু করা ইমেল আইডির প্রচার করবে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক। স্থানীয় ভাষায় সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক কাগজেও ওই বিষয়ে মানুষকে অবহিত করতে হবে।
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কোনও সন্দেহ নেই যে ন্যায়বিচারের স্বার্থে সন্দেশখালির ঘটনায় নিরেপক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। মহিলাদের উপর অত্যাচার, সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তফসিলি জনজাতির জমি কেড়ে নেওয়া সহ বিভিন্ন অভিযোগ বিবেচনা করে আদালত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সিবিআই সন্দেশখালির মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করবে।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২ মে। ওই দিনই সন্দেশখালির স্থানীয়দের জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগের উপযুক্ত অনুসন্ধান এবং তদন্ত করে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিবিআইকে।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা তথা সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। খবর রটতেই শাহজাহান অনুগামীদের হাতে আক্রান্ত হতে হয় ইডি আধিকারিকদের। সেই ঘটনার কয়েকদিন পর থেকে সন্দেশখালির বেড়মজুর, পাত্রপাড়া-সহ একাধিক এলাকার মহিলারা রাস্তা নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সামনে আসে নারী নির্যাতনের একের পর এক ভয়ঙ্কর অভিযোগ, সঙ্গে জমি, সম্পত্তি দখলের কথাও। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি, জারি হয় ১৪৪ ধারা। ইডিকে মারধরের ৫৫ দিন পর শাহজাহানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে আদালতের নির্দেশ আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল সন্দেশখালিতে ক্যাম্প করে নারীদের নির্যাতনের অভিযোগ নথিভুক্ত করেন। যেগুলো হলফনামা আকারে আদালতে জমা দেন তিনি। অভিযোগের ভয়াবহতা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি।
মামলাকারী আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বলেন, 'আমরা যে অভিযোগ করছিলাম, ওখান থেকে সব অভিযোগ নিয়ে হলফনামা জমা দিয়েছিলাম। অনেক শাহজাহান রয়েছে। ১৫০ জনের নাম রয়েছে। আমি সেই তালিকা এবার সিবিআই-কে দেব। এনেকে গ্রেফতার হবে। হাইকোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে স্বাগত।'