Advertisment

পথেঘাটে রক্তের দাগ, আতঙ্কে সিঁটিয়ে সন্দেশখালি

স্বামী হারানোর শোকে বারাবার সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলছেন প্রদীপের স্ত্রী পদ্মা। প্রদীপের বাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Sandeshkhali Violance

এলাকাজুড়ে শ্মশানের নৈঃশব্দ, শব্দ বলতে কেবল হাহাকার। এক্সপ্রেস ফটো: শশী ঘোষ।

২ দিন কেটে গিয়েছে। এখনও রাস্তায় চাপ চাপ রক্তের দাগ। আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। এলাকা এবং এলাকাবাসীর মন জুড়ে হিংসার ছাপ এতটাই স্পষ্ট যে ভয়ে ওঁদের কেউ বাড়ির বাইরে পা রাখার সাহসটুকু পর্যন্ত পাচ্ছে না। থমথমে মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাঙ্গিপাড়া, রাজবাড়ি পূর্ব পাড়া এলাকা। মাঝে মধ্যেই কানে ভেসে আসছে ডুকরে ওঠা কান্না।

Advertisment

আরও পড়ুন: ‘অভিশপ্ত’ জামাইষষ্ঠী, সন্দেশখালি জুড়ে হাহাকার

সোমবার যখন বিজেপির ডাকে বসিরহাট মহকুমা এলাকায় বনধ চলছে, তখন বাঙ্গিপাড়ায় ঢুঁ মারতেই দেখা গেল, চারদিকে শ্মশানের স্তব্ধতা। সুকান্তর বাড়িতে কেউ নেই। শনিবারের হিংসায় তছনছ হয়ে গিয়েছে নিহত সুকান্তের পরিবার। ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন সুকান্ত মণ্ডলের মা। ছেলের মৃত্যুতে বারবার সংজ্ঞা হারিয়েছিলেন তিনি। শেষমেশ তাঁকে সুকান্তর মামার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সুকান্তর যখন ৩ বছর বয়স, তখন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর বাবার। সেই ‘শিবরাত্রির সলতে’ সুকান্তও মাকে ছেড়ে চলে গেলেন। এখন কী নিয়ে বাঁচবেন সুকান্তর মা?

publive-image বেশ কয়েক জনকে এই ভেড়ির কাছেই খুন করা হয়েছে বলে খবর।

সুকান্তর পাশেই বাড়ি প্রদীপ মণ্ডলের। সেদিনের হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রদীপও। প্রদীপের দুই সন্তান রয়েছে, একজন নবম শ্রেণির ছাত্র, আরেক জন সপ্তম শ্রেণির। বাবাকে হারিয়ে মুহ্যমান দুই স্কুল পড়ুয়া। এদিকে, স্বামী হারানোর শোকে বারাবার সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলছেন প্রদীপের স্ত্রী পদ্মা। প্রদীপের বাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এদিন প্রদীপের বাড়িতে ঢুকতেই ভাঙচুরের নমুনা চোখে পড়ে। টেবিল-চেয়ার ভাঙা, পড়ে রয়েছে ভাঙা টিভি সেটও। দাদাকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন প্রদীপের ভাই সন্দীপও।

আরও পড়ুন: “তৃণমূল করি, মমতাকে নিয়ে গান লিখেছি, তবু দাদাকে কেন খুন করল তৃণমূল”?

সন্দীপ মণ্ডল বললেন, ‘‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। কী করে থাকব? কেউ মারল, গ্রেফতার হল না’’। অন্যদিকে, সেদিনের হিংসার ঘটনার পর থেকে এখনও খোঁজ নেই দেবদাস মণ্ডলের। দেবদাসের ভাই নিমাই মণ্ডল এ ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের ধারনা ওকে মেরে ভেড়িতে ফেলে দিয়েছে। তদন্ত হলে হয়তো উদ্ধার করা হবে। আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি’’।

সন্দেশখালিতে হিংসার শিকার হয়েছেন তৃণমূলকর্মী বলে পরিচিত কায়েম মোল্লাও। রাজবাড়ি-পূর্ব পাড়া গ্রামে তাঁর বাড়িতেও শোকের ছায়া। বাঙ্গিপাড়ার মতো কায়েম মোল্লার গ্রামও থমথমে, কার্যত জনশূন্য বলা চলে। দিনের বিভিন্ন সময় এই সব গ্রামে পুলিশি টহল চোখে পড়ছে। এলাকায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটলেও, এলাকার ভেড়ির দখলদারিও গন্ডগোল একটা কারণ হতে পারে।

kolkata news
Advertisment