Sandeskhali Case: রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গত শুক্রবার সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে স্থানীয়দের হামলার শিকার হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। একপ্রকার বাধ্য হয়েই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সন্দেশখালি ছাড়তে হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই নিঁখোজ তৃণমূল নেতা শাহজাহান। যদিও গত শনিবার গোপন ডেরা থেকে অডিও বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, ঘটনার পর চারদিনের বেশি পার হলেও পুলিশ এখনও শাহজাহান শেখকে ধরতে পারেনি। এদিকে সেদিনের ঘটনার জন্য কেন্দ্রীয় এজেন্সির ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছে তৃণমূল। ইডি-র 'প্ররোচনা'তেই ওই হামলা বলে দাবি রাজ্যের শাসক দলের। তারপরই জানা যায়, মারধর খাওয়া ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের হয়েছে। ইডির অভিযোগ, এফআইআরের কপি চাওয়া সত্ত্বেও সেটা পুলিশ তাদের দিচ্ছে না, এমনকি ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বুধবার সকালে গত শুক্রবারের ঘটনার কথা জানার জন্য বসিরহাটের ডিএসপি সানন্দা গোস্বামী-র নেতৃত্বে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে গিয়েছিল পুলিশের একটি দল।
কেন বসিরহাটের পুলিশের দল ইডি দফতরে?
৫ জানুয়ারি ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন ইডির ৪ জন গোয়েন্দা। তাঁদের বয়ান আগেই রেকর্ড করেছিল বসিরহাট জেলা পুলিশ। সেদিনের অভিযানে যাওয়া বাকি ইডি গোয়েন্দাদেরবয়ান রেকর্ডের জন্য বুধবার সিজিও কমপ্লেক্সে যায় বসিরহাট পুলিশ। জানা গিয়েছে, বয়ান ভিডিও রেকর্ডিং করারও কথা ছিল। এই উদ্দেশে ডিএসপির দেহরক্ষীকে পিস্তল জমা রেখে তবেই ইডি দফতরের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, ইডি গোয়েন্দারা পুলিশকে এদিন কোনও বয়ান দিতে রাজি হননি। ফলে ফিরে যান পুলিশ কর্মীরা।
এই ঘটনার ঘন্টাখানেকের মধ্যে ইডি দফতরে পৌঁছন বনগাঁর ডিএসপির নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। তাঁদের সঙ্গেও ছিল ক্যামেরা। তবে বসিরহাটের মত বনগাঁর ডিএসপি-কেও খালি হাতে ফিরতে হয় সিজিও থেকে।
হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডি
ইডি-র অভিযোগ, রেশন দুর্নীতি মামলায় তল্লাশিতে যাওয়া গোয়েন্দাদের উপর হামলা হল। কিন্তু, মারধর খাওয়া ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইডির আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, ইডির অফিসারের বিরুদ্ধে যে এফআইআর নথিভূক্ত হয়েছে তা এখনও পর্যন্ত ওয়েবসাইটে আপলোড হয়নি। এফআইআরের কপি চাওয়া সত্ত্বেও কোনও রকমভাবে তাদের দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু সকলে জানেন যে এফআইআর হয়েছে ইডির অফিসারের বিরুদ্ধেই।
অন্যদিকে ওই শুক্রবার রাতেই রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ বনগাঁর প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কার আঢ্যকে। সেই সময় ইডি আধিকারিকদের উপর চড়াও হয় স্থানীয়রা। ভাঙা হয় কেন্দ্রীয় এজেন্সির গাড়ি। পুলিশকে জানিয়ে গেলেও কেন এই হাল তা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে ইডি-র তরফে।
তল্লাশির সময় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তোলার দাবি জানিয়েছে ইডি। এরপরই মামলার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি হতে পারে।
ঘটনাটিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এদিন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। একইসঙ্গে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। মামলার অনুমতি দিয়েছে উচ্চ আদালত। আগামীকাল বৃহস্পতিবার মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
ইডি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ
গত শুক্রবারের ঘটনার পর শাহজাহান শেখের বাড়ির কেয়ারটেকার ন্যাজাট থানায় ইডির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, অবৈধভাবে তল্লাশি করতে এসে বাড়ির তালা ভেঙেছে ইডি, হেনস্থা করা হয়েছে তাঁদের। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করল ইডি।