মেলার রাশ থাকবে কার হাতে? তা নিয়েই ফের মতুয়াদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। বনগাঁ লোকসভার প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর গোষ্ঠীর দাবি মেলা পরিচালনার ভার তাঁরাই পেয়েছেন। রাজ্য প্রশাসনকে হাতিয়ার করে ক্ষমতার দখল নেওয়ার পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন বর্তমান সংসদ শান্তনু ঠাকুর। মেলার পরিচালনার দখল পেতে ইতিমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ।
মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে মতুয়া ধর্ম গুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্ম তিথিতে উত্তর ২৪ পরগণার ঠাকুরনগর ঠাকুর বাড়িতে পূর্ণ স্নান হয়। যাকে কেন্দ্র করে দলে দলে কয়েক লক্ষ মতুয়া ভক্ত ঠাকুরবাড়িতে ভিড় জমান। ঠাকুর বাড়িতে সাত দিনের মেলা বসে। এ বছর মেলা হবে ২২ মার্চ। এত দিন মমতা বালা ঠাকুর বনগাঁর সংসাদ থাকায় এই মেলার রাশ ছিল তাঁর হাতেই। তবে, ২০১৯ লোকসভা ভোটে বনগাঁ লোকসভায় পালা বদল হয়। সাংসদ নির্বাচিত হন ঠাকুর পরিবারের ছোট কর্তা মুঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের ছোট ছেলে শান্তনু ঠাকুর।
ঠাকুর নগরে মতুয়াদের ঠাকুরবাড়ি। ছবি: উৎসব মণ্ডল
মেলা পরিচালনা প্রসঙ্গে শান্তনু ঠাকুরের দাবি, 'মমতা বালা ঠাকুর ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত অবৈধ ভাবে মেলা করছেন। এ বছের আমারা মেলা করার জন্য প্রশানের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু রাজ্য সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ বছরও মেলা করতে চাইছে।' তাঁর কথায়, 'খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মেলার অর্থের লোভে এই সব করাচ্ছেন। কারণ, তাঁর কাছে মেলার উপার্জনের বিপুল অর্থ পৌঁছে যায়। বাস্তব ।যার কিছুই জানেন না মতুয়ারা।' মেলার রাশ হাতে পেতে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দারস্ত হয়েছেন মতুয়া ধর্ম গুরু তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া মেলা করার জন্য সব ধরনের লড়াই লড়তে তিনি প্রস্তুত বলে গুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাংসদ।
আরও পড়ুন: মতুয়াদের নিয়ে দালালি করছে বিজেপি: মমতা
অন্য দিকে মমতা বালা শিবিরের তরফে মতুয়া মেলা কমিটির কার্যকারী সভাপতি ধ্যানেশ নারায়ণ গুহ বলেন, 'শান্তনু ঠাকুর নিদিষ্ট নিয়ম মেনে আবেদন না করায় আমরা মতুয়া মেলা করার অনুমতি পেয়েছে। আমরাই মেলা করব।' মেলা ঘিরে মমলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'মহামান্য আদাল যা রায় দেবেন তা মাথা পেতে মেনে নেব।'
মতুয়া মেলাকে কেন্দ্র করে ঠাকুর পরিবারের দুই শিবিরের দ্বন্দ্ব দীর্ঘ দিনের। মতুয়াদের একটি অংশের দাবি, মেলা থেকে ভক্তদের প্রণামী ও অনুদানে বিপুল অর্থ আমদানি হয়। মেলার রাশ যার হাতে থাকে মুলত তার কাছে এই অর্থ যায়। আর ঘিরেই বিবাদ। এবার সেই বিবাদেও লাগল রাজনীতির রং।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন