বাবা ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। মাঝেমধ্যে বাড়তি উপার্জনের জন্য বাড়ির ছাদ ঢালাইয়ের কাজেও যান। অভাবের সংসার। কিন্তু সব বাধাকে দূরে সরিয়ে মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে মালদহের রতুয়ার ভাদো এলাকার সারিফা খাতুন। ৮০০-র মধ্যে ৭৮৬ পেয়েছে সে।
Advertisment
স্থানীয় ভাদো মুসলিম গার্লস মিশনে পড়াশোনা করলেও সারিফা পরীক্ষা দিয়েছিল ভাদো বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসা থেকে। সারিফার সঙ্গেই পড়াশোনা করত ভাদোর ইমরানা আফরোজ! ইমরানাও রাজ্যে দ্বিতীয় হয়েছে। ইমরানার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭৫। এছাড়া ওই গার্লস মিশনের আরও দুই ছাত্রী আনজুমানআরা খাতুন ও মাহিদা খাতুন ভাদো বটতলা হাই মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল। ৭৬৩ নম্বর পেয়ে রাজ্যে যুগ্মভাবে দশম হয়েছে তারা।
হাই মাদ্রাসার পরীক্ষায় ভাদো এলাকার চার ছাত্রীর ফলাফল বের হতেই এদিন গোটা এলাকাজুড়েই খুশির আবহ ছড়িয়ে পড়েছে। ইমরানা ও মাহিদার বাবা শিক্ষকতা করেন। আনজুমানআরার বাবা ক্ষুদ্র চাষি। কিন্তু সারিফার বাবা ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালান। তার পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে সারিফা ছোট। সারিফার বাবা উজির হোসেন বাড়ির সামনেই ঠেলাগাড়িতে করে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। মাঝেমধ্যে বাড়ি ঢালাইয়ের কাজ হলে বাড়তি রোজগারের আশায় সেখানেও শ্রমিকের কাজে যান।
ফলে মিশনের তার মাসের টিউশন ফি এখনও দিতে পারেনি সারিফা। কিন্তু ইচ্ছেশক্তি আর সংকল্প থাকলে যে সবকিছুই সম্ভব তা দেখিয়ে দিয়েছে সারিফার। কিন্তু ভাল ফল করলেও এখন কীভাবে পড়াশোনা চলবে তা ভেবে দিশেহারা সারিফার পাশাপাশি তার পরিবারও। এদিন মেয়ের ফল জানার পর কেঁদে ফেলেন উজির! বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যদি সাহায্য করতেন তাহলে মেয়ের পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। আর সারিফার ইচ্ছে, ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব এখনও তা অজানা তার।