গত বুধবার নাম ছিল। কিন্তু দেখা য়ায়নি তাঁকে। আর শনিবার তাঁর নামই উধাও। শুক্রবারই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ১১ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে যুব তৃণমূলের নেত্রী সায়নী ঘোষকে। তারপরই এদিন সকালে তৃণমূলের তরফে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য দলের তারকা প্রচারকের যে পরিমার্জিত তালিকা প্রাকাশ করা হয়েছে সেই তালিকায় নাম নেই সায়নী ঘোষের! শুক্রবারও ছিল না। কেন হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত? সেই রহস্যভেদে এখনও শাসক দলের তরফে কিছু জানানো হয়নি। তাহলে কী ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের পর যুব তৃণমূলের সভানেত্রীর সঙ্গে জোড়-ফুল শিবির দূরত্ব বজায়ের চেষ্টা করছেন? সেই জল্পনাই ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে।
তাহলে কী তৃণমূলে ক্রমশ 'কোঁঠাসা' সায়নী? পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে আর তাঁকে ব্যবহার করতে চাইছে না দল? শনিবার অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলেছেন যুব তৃণমূলের সভানেত্রী। সায়নী ঘোষ বলেছেন, 'দল আমার পাশেই আছে। আমি প্রচারেও যাব। মমতাদি আমার ফোনের ওয়ালপেপারে নেই, মনের ওয়ালপেপারে আছেন।'
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় এর আগে দলের মহাসচিবকে বরখাস্ত করেছে তৃণমূল। সাসপেন্ড করা হয়েছে যুব তৃণমূলের দুই পদাধিকারী কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যদিও গরু পাচার দুর্নীতি মামলায় জেলে থাকলেও দিব্যি জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে বহাল রাখা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে। কিন্তু তৃণমূল বিলক্ষ্ণ বুঝছে যে দুর্নীতির দায়ে একাধিক নেতা জেলা যাওয়ায় দল সমন্ধে বিরূপ ধারণা বেড়েছে জনমনে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি সায়নী ঘোষকে প্রচারে ব্যবহার করলে শাসক দল সমন্ধে ভুল বার্তা যেতে পারে ভোটারদের কাছে। তাই সায়নীকে প্রচারে ব্যবহার করে ঝুঁকি নিতে রাজি নয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
শুক্রবার ১১ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সায়নী ঘোষের দাবি ছিল, তদন্তে তিনি ১০০ শতাংশ সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে যুব তৃণমূল নেত্রীর জবাবে সন্তুষ্ট নয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। কেন্দ্রিয় এজেন্সির নজরে রয়েছে সায়নীর দুটি ফ্ল্যাট। বিপুল অঙ্কের ওই দুই ফ্ল্যাট কেনার অর্থের উৎস, ইএমআই-য়ের উৎস কী তা জানতে চায় ইডি। তাই ফের ৫ই জুলাই সায়নীকে তলব করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।