কন্যাশ্রী প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়ে দুই দিদি পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। কৃতজ্ঞ ইংরেজবাজারের দাস পরিবার। মুখ্যমন্ত্রী ধন্যবাদ জানাতে তাঁই মাত্র আট বছর বয়সেই সাইকেল চালিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সায়ন্তিকা দাস। বাড়ির ছোট মেয়ে এই ইচ্ছাশক্তিকে সর্বতভাবে সমর্থন জানিয়েছেন অভিভাবকেরা। কিন্তু এত ছোট বয়সে কীভাবে সাইকেল চালিয়ে সুদূর কলকাতার কালীঘাটের যাবে ওই খুদে পড়ুয়া? তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন।
তবে বিতর্ক এড়িয়ে শুরু থেকেই ছোট মেয়ের উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন পরিবারের লোকেরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে আমসত্ত্ব এবং গোলাপজামুন মিষ্টি দেওয়ারও ইচ্ছা রয়েছে খুঁদে পড়ুয়া সায়ন্তিকার।
ইংরেজবাজার পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের মনস্কামনাপল্লী এলাকায় এক চিলতে টালি এবং পাকা দেওয়ালের বাড়িতে থাকেন সায়ন্তিকা। ওর বাবা প্রদীপ দাস পেশায় গাড়ির চালক। সায়ন্তিকার মা উমা দাস গৃহবধূ। যা তাতে কোনওমতে সংসার চলে। সেখানে শিক্ষার খরচ চালানো বাতুলতা। তবে আগাগোড়াই পড়াশোনার ইচ্ছা ছিল সায়ন্তিকার দুই দিদির। সেই সময় খুবই কার্যকর হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত কন্যাশ্রী প্রকল্প। সান্তিকার বড় দিদি আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। আর ছোড়দি পড়েন কলেজে। শুধু কন্যাশ্রীই নয়, রূপশ্রীর মাধ্যমে প্রদীপবাবুর বড় মেয়ের বিয়েও হয়েছে। অর্থের অভাবে আর পড়ালেখা আটকাবে না সায়ন্তিকার। দিদিদের দেখে বুঝেছে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীটি। তাই মন দিয়ে এখন পড়াশোনা করতে চায় সে। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীকে।
মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানতে মালদহ থেকে সাইকেল চালিয়ে ২৬মে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন সায়ন্তিকা দাস।
মালদার জেলাশাসক থেকে পুলিশ সুপার সহ সরকারি আধিকারিকদের লিখিতভাবে নিজের ইচ্ছার কথা জানিয়েছে সায়ন্তিকা।
সায়ন্তিকার মা উমা দাস জানিয়েছেন, তিনি নিজের আর্থিক অসঙ্গতির কারণে বেশীদুর পড়াশোনা করতে পারেননি। অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। আর্থিক কারণে তার মেয়েদের পড়াশোনারও মাঝপথে সমাপ্তি ঘটতো। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী করা কন্যাশ্রী, রূপোশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে সমস্যা অনেকটায় সমাধান হয়েছে। তাঁর ছোট মেয়ে তাই দিদির ভক্ত। ছোট মেয়ের ইচ্ছা অনুযায়ী ছোট মেয়ের সঙ্গে তাঁরাও যাচ্ছেন দিদির কালীঘাটের বাড়িতে।
ছোট শিশুর এমন কান্ডে উচ্ছৃসিত ২৭নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার পুজা দাস। তাঁর আশ্বাস, শিশুটিকে উৎসাহ দিতে তার পাশে থেকে সমস্তরকম সহযোগিতা করবেন।