রামনবমীর সংঘর্ষ ঘিরে কলকাতা হাইকোর্টের এনআইএ তদন্তের নির্দেশের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল এফআইআর, নথি, সিসিটিভি ফুটেজ, বাজেয়াপ্ত জিনিসপত্র দু'সপ্তাহের মধ্যে এনআইএর হাতে তুলে দিতে হবে। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। সোমবার সেই আবেদনই খারিজ করে দিল বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচুড়, বিচারপতি জেবি পাদরিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্র। আদালত জানিয়েছে, 'বিশেষ ছুটির আবেদন (এসএলপি) গ্রহণ করতে আগ্রহী নয়।'
গত রামনবমীতে ধর্মীয় মিছিল ঘিরে রাজ্যের হাওড়া এবং হুগলি জেলায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। সেই মিছিলের ডাক দিয়েছিল সংঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ এবং অনুমোদিত সংগঠনগুলো। ওই মিছিল ঘিরেই ছড়িয়েছিল সংঘর্ষ। অভিযোগের তির উঠেছিল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একাংশের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর গেরুয়া শিবির অভিযোগ করেছিল, এই সংঘর্ষের পিছনে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস পরোক্ষভাবে মদত দিয়েছিল। গেরুয়া শিবিরের এই অভিযোগকে সামনে রেখে এনআইএ তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার প্রেক্ষিতেই গত এপ্রিলে কলকাতা হাইকোর্ট রামনবমীর মিছিল ঘিরে সংঘর্ষের অভিযোগে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল।
শুভেন্দু অধিকারীর সেই আবেদন বা জনস্বার্থ মামলাকে 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' অভিযোগ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বক্তব্য ছিল, রামনবমীর মিছিলে কোনও বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়নি। তাই এনআইএ তদন্তের দাবি এক্ষেত্রে খাটে না। কিন্তু, সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে অতীতে জঙ্গি যোগের নানা অভিযোগকে কেন্দ্র করে গোটা বিষয়টিতে এনআইএ তদন্তের নির্দেশই বহাল রাখল শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন- চাকরিজীবীদের জন্য বিরাট সুখবর! সুদের হার বাড়াল ইপিএফও
অতীতে নানা সময় পশ্চিমবঙ্গ থেকে জঙ্গিদের গ্রেফতার করেছে এনআইএ। পাশাপাশি খাগড়াগড়-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরণের তদন্তেও নেমেছে এনআইএ। সেই সব জায়গায় জঙ্গিযোগের অভিযোগ বারবার উঠেছে। গ্রেফতারও করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। প্রতিবারই অবশ্য রাজ্য প্রশাসন গোটা বিষয়গুলোকে সামান্য ব্যাপার বলে দাবি করেছে। যদিও সেই দাবি মানতে চায়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ।