সুস্থতার পথে দেশ! কমেছে সংক্রমণ, খুলেছে স্কুল কলেজ সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্কুল খুলে গেলেও দেখা মিলছে না পুলকার অথবা স্কুলবাসের। ফলে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে পড়ুয়া অভিভাবকদের। কেন এমন সমস্যা, এই সমস্যা মিটবে কবে? এটাই এখন প্রথম প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে অভিভাবকদের কাছে। অতিমারি আতঙ্ককে উপেক্ষা করেই পড়ুয়ারা আবার স্কুলমুখী হচ্ছে। তবে অমিল স্কুলবাস।
কারণটা কী? ওয়েস্ট বেঙ্গল কন্ট্রাক্ট ক্যারেজ ওনার্স অ্যান্ড অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানান হয়েছে রাজ্য জুড়ে সংগঠনের আওতায় থাকা বাসের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার। রাস্তায় নেমেছে মেরেকেটে ৫০০। কেন, কী জানাচ্ছেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি গাঙ্গুলি। তাঁর কথায়, ‘অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। বাকী প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ পড়ুয়াদের অভিভাবক তাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি’।
সেই সঙ্গে তিনি বলেন বেশিরভাগ স্কুলে এখন চলছে পরীক্ষা। এই সময় অভিভাবকরাই তাদের সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আশা হারাচ্ছি না’। এপ্রিল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি জানান, প্রায় দু বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে প্রবল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল বাসমালিক এবং পুলকার চালকদের অনেকেই পেশা বদল করেছেন এবং অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে পেট্রোল ডিজেলের দাম। অনেকেই আর পুরনো ভাড়াতে স্কুলপড়ুয়াদের নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছেন না’।
আরও পড়ুন স্কুল খুললেও উধাও পুলকার, সংকটে বহু পড়ুয়া-অভিভাবক
উঠে আসছে ভাড়া বাড়ানোর মত বিষয়ও। হাওড়া এবং উত্তর ২৪ পরগনায় স্কুল বাস এবং পুলকারের ওপর কর ছাড়ের দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই আরটিও অফিসে ডেপুটেশন জমা দেওয়া হয়েছে। শহরের এক বাস মালিক জানান, 'পড়ুয়ার সংখ্যা নিশ্চিত না হতে পারা পর্যন্ত স্কুল বাসের সংকট দেখা দেবে'। তিনি জানান, তাঁর মোট দুটি বাস রয়েছে। একটি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তিতে রয়েছে অন্যটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে যুক্ত রয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি জানান, ‘আগের মতো পর্যাপ্ত স্কুল পড়ুয়া না পেলে আমাদের পক্ষে বাস নামানো কঠিন হয়ে পড়বে।' অন্যদিকে পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট অরূপম দত্ত বলেন, 'ফি নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা চলছে। অনেক অভিভাবক ফি বাড়াতে রাজি হচ্ছেন না’।
সেই সঙ্গে বেশির ভাগ স্কুলে চলছে পরীক্ষা কাজেই এপ্রিলের আগে এই সমস্যার কোনও সুরাহা হবে না। অন্যদিকে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ‘অনেক পুলকার অথবা বাস যাতে তাঁদের ছেলেমেয়েরা আগে স্কুলে যাতায়াত করত , তারা প্রায় আগের তুলনায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানোর কথা বলছেন, সেই সঙ্গে যে সময় স্কুল বন্ধ ছিল সেই সময়েরও অর্ধেক টাকা দাবি করছেন’।
স্কুল বাসচালক বিশ্বজিৎ মালের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ‘বহু স্কুলে এক দিন অন্তর পড়ুয়াদের ডাকা হচ্ছে । সব ক্লাস এখনও পুরোদমে চালু হয়নি । তাই গাড়িতে পড়ুয়া সংখ্যা খুবই কম ।আগে যেখানে বাসে ৩০ থেকে ৪০ জন পড়ুয়া যাতায়াত করত সেখানে এখন সেই সংখ্যা ১০-এ নেমে এসেছে। কী করে চলবে আমাদের”।
তিনি আরও বলেন যে, "গাড়ির মেরামতের খরচ ও তেলের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গাড়ি চালাতে হলে ভাড়া বাড়াতেই হবে । না হলে আমরা আর পরিষেবা দিতে পারব না। তবে গাড়ির ভাড়া বাড়ালে অভিভাবকরা আপত্তি জানাচ্ছেন ।" এবিষয়ে একাধিক স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও বিষয়টি অভ্যন্তরীণ বলে দায় এড়িয়েছেন।