প্রায় দুবছর ধরে বন্ধ স্কুল-কলেজ সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অবিলম্বে শিশুদের স্বার্থে তা খোলা হোক এমনই দাবি জানালো হল ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিকের তরফে। এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটি স্মারক লিপিও জমা দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘কোভিড মহামারী সময়কাল শিশুদের জন্য বিশেষভাবে কঠিন, তাদের স্বাভাবিক জীবন এবং বিকাশকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে প্রভাবিত করে চলেছে। স্কুলগুলি এখন প্রায় ২ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে, এবং পার্ক এবং খেলাধুলার সুবিধাগুলিও বেশিরভাগই বন্ধ রয়েছে৷ স্কুলগুলি শুধুমাত্র শিশুদের অ্যাকাডেমিক জ্ঞান প্রদানের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং সমবয়সীদের সঙ্গে মিশতে, খেলাধুলায় অংশগ্রহণ এবং সামাজিক ও জীবন দক্ষতার বিকাশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে কোভিড ১৯ মহামারি একই সঙ্গে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যেও আঘাত হানছে। তাদের মধ্যে মানসিক অস্থিরতা তৈরি করছে। শিশুদের স্বার্থে অবিলম্বে স্কুলগুলি খোলা দরকার’।
এপ্রসঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিকের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার ইন্দ্রনীল চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘যদিও বেশ কয়েকটি স্কুল অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করছে, গ্রামীণ এবং শহুরে সমাজের অনেক অংশ রয়েছে যারা এগুলি অ্যাক্সেস করতে অক্ষম। এইভাবে এই অনলাইন পদ্ধতিগুলি দীর্ঘমেয়াদী স্কুলে যাওয়ার সুবিধাগুলির বিকল্প কখনই হতে পারেনা’।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘আমাদের কাছে এখন প্রচুর পরিমাণে ক্লিনিকাল ডেটা উপলব্ধ রয়েছে যা নির্দেশ করে যে কোভিড ১৯ সংক্রমণ শিশুদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে কম প্রভাব ফেলে। শিশুরা আক্রান্ত হলেও তাদের মধ্যে ২.৫ থেকে ৩ শতাংশের কম গুরুতরভাবে প্রভাবিত হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গে করোনার শিশুমৃত্যুর হার শূন্য থেকে ১৫ বছর বয়সী সমস্ত সংক্রামিত শিশুদের মধ্যে ০.০৮%। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যে স্কুল খোলার মাধ্যমে সংক্রমণ হার বাড়ে না’। সেই সঙ্গে তিনি জানান, ‘একাধিক দেশে প্রথম ঢেউ পরবর্তী কালে স্কুল গুলিকে চালু করা হয়েছে। এখনও তা চালু রয়েছে সেই সকল দেশে স্কুল থেকে করোনা ছড়ানোর কোন নথি সামনে আসেনি’।
ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিকসের তরফে বলা হয়েছে ‘যে সকল শিশুদের মধ্যে কোমর্বিডিটি রয়েছে তাদেরই কেবল স্কুলে উপস্থিতির ক্ষেত্রে ডাক্তারের শংসাপত্র প্রয়োজন, এছাড়া অনায়াসেই খোলা যেতে পারে স্কুল-কলেজ সহ রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি’।
সেই সঙ্গে বলা হয়েছে দেশ তথা রাজ্যে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে ১৫-১৮ বছর বয়সিদের টিকাদানের কাজ। যেখানে রাজ্যে সব কিছুই প্রায় খোলা রয়েছে সেখানে স্কুলগুলিও অবিলম্বে চালু করা দরকার। একই সঙ্গে বাড়ির বড়দের যথাযথ ভাবে টিকাদান এবং কোভিড প্রটোকল মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে সংগঠনের তরফে। ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাঙ্ক সহ একাধিক সংস্থা স্কুল খোলার পক্ষে জোরলো দাবি জানিয়েছে। সেই সঙ্গে অভিভাবকদের তরফে স্কুল খোলার আর্জি জানানো হয়েছে।