কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজ কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার সমকামিতা বিষয়ক সিনেমা দেবলীনা মজুমদার পরিচালিত 'গে ইন্ডিয়া ম্যাট্রিমনি'র প্রদর্শন ও সমকামিতা বিষয়ক আলোচনা সভা জবরদস্তি বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। কলেজ কর্তৃপক্ষের এই আচরণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাল মানবাধিকার সংগঠন গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (এপিডিআর)। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শূর এই ভাবে মানুষের অধিকার হরণের নিন্দা করে স্কটিশচার্চ কলেজের 'পশ্চাদপদ মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনা'র তীব্র সমালোচনা করেছেন। একইসঙ্গে রঞ্জিত শূর অভিযোগ করেছেন, এইভাবে মানুষের অধিকার হরণ করে স্কটিশচার্চ কলেজ কর্তৃপক্ষ আসলে তাদের 'অশিক্ষা'র পরিচয় দিয়েছেন।
রঞ্জিত শূর জানান, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে সমকামিতা নিয়ে সঠিক শিক্ষা দেওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা হল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ, এই কলকাতা শহর দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী বলে পরিচিত। সেই শহরের 'অন্যতম প্রধান প্রগতিশীল (!) কলেজ'-এ সমকামিতা নিয়ে সিনেমা বা আলোচনা সভায় নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। যাতে রীতিমতো বিস্মিত এপিডিআর! আর, তারই প্রেক্ষিতে রঞ্জিত শূর বলেন, 'আমরা মনে করি স্কটিশের এই পরিচালন কর্তৃপক্ষ কলেজ পরিচালনার যোগ্যই নয়। তাঁদের অপসারণ করা উচিত।'
এপিডিআরের বক্তব্য, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় হল মুক্ত চিন্তা ও চর্চার জায়গা। কিন্তু, তারপরও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'কোড অব কন্ডাক্ট' চাপানোর চেষ্টার পর স্কটিশ চার্চ কলেজের সংকীর্ণ নীতিপুলিশির সাক্ষী হয়েছে মহানগরী। এই সব পদক্ষেপ তাঁদের তাঁদের উদ্বিগ্ন করেছে বলেই অভিযোগ এপিডিআর সংগঠনের। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকেও দুষেছে এই মানবাধিকার সংগঠন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শূর এই প্রসঙ্গে বলেন, 'তৃণমূলের ১২ বছরের কুশাসনে, ছাত্র ইউনিয়ন না-থাকায়, ছাত্র ও শিক্ষকদের গভীর রাজনীতি ও সংস্কৃতিচর্চার অভাবে কলকাতার ছাত্রসমাজ তথা বিদ্বান সমাজে গভীর ক্ষয় সৃষ্টি হচ্ছে। তাই কলেজেরই বিভিন্ন বিভাগ আয়োজিত অনুষ্ঠান ক্ষমতার অঙ্গুলিহেলনে শেষ মুহূর্তে বন্ধ করে দিতে পারল কলেজ কর্তৃপক্ষ।'
আরও পড়ুন- মোদী সরকারে বড় ধাক্কা! বেআইনি ভাবে পদে বহাল ইডিকর্তা, বোঝাল শীর্ষ আদালত
এর বিরুদ্ধে কলকাতার বৃহত্তর ছাত্রসমাজ ও নাগরিক সমাজকে তীব্র প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এপিডিআর। সংখ্যালঘু তকমার আড়ালে স্কটিশচার্চ কলেজ কর্তৃপক্ষ যেন কোনওভাবে এই বিষয়ে পার না-পায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা-ও নিশ্চিত করুক, এমনটাই দাবি জানিয়েছে এপিডিআর।