ডেঙ্গুর পর স্ক্রাব টাইফাস ঘিরে আতঙ্ক বাড়ছে রাজ্যে। বহরমপুরে দুটি পৃথক হাসপাতালে স্ক্রাব টাইফাস আক্রমণে মৃত্যু হয় এক স্কুল ছাত্রী এবং এক ব্যবসায়ীর। মৃত তামান্না ফেরদৌস(১৬) দশম শ্রেণির ছাত্রী। মৃত শ্যামল কুমার প্রামাণিক (৪৭) পেশায় ব্যবসায়ী। স্ক্রাব টাইফাস ভাইরাস ঠেকাতে প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ মৃতদের পরিবারের।
জানা যায়, গত ২৫ নভেম্বর থেকেই জ্বর,প্রচন্ড মাথাব্যথার মত উপসর্গ দেখা দেয় শ্যামলবাবুর। প্রথম কয়েকদিন খুব একটা অসুবিধা না হলেও দিন দুয়েক পর থেকেই শরীরের অবস্থা সঙ্কটজনক হতে শুরু করে। প্রথমে বেশ কয়েদিন জ্বরের ওষুধ খেয়ে সুস্থ ছিলেন তিনি। পরে অবশ্য ফের জ্বর মাথাব্যথা মাতাচারা দেয়। অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকায় পরিবারের লোক তড়িঘড়ি তাঁকে বেলডাঙা থেকে ১লা ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে বহরমপুরের নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয় শ্যামলকুমার প্রামািইককে। বৃহস্পতিবার সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ওই ব্যবসায়ী। স্ক্রাব টাইফাস সংক্রমিত হয়ে মাল্টি অর্গান ফেলিওরের ফলেই শ্যামল প্রামাণিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে নার্সিমহোম কর্তৃপক্ষ। শ্যামলবাবুর বাড়ির তরফে এই মৃত্যুর জন্য সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মশাবাহিত রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নজির স্থাপন আলিপুরদুয়ার হাসপাতালের
অপরদিকে বহরমপুরের কর্ণসুবর্ণ এলাকার দশম শ্রেণীর পড়ুয়া তামান্নাকেও জ্বর আর মাথা ব্যথার উপসর্গ নিয়ে গত বুধবার বহরমপুর স্টেশন লাগোয়া বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি করে তার পরিবারের লোকেরা।চিকিৎসায় সাড়া না মেলায় তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। স্ক্রাব টাইফাস আক্রান্ত হয়ে রেস্পিরেটরি ফেলিওরে বছর ১৬-এর মেয়েটির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। মেয়েকে হারিয়ে তামান্নার বাবা আতাবুর রহমান বলেন, 'এত বড় অনিষ্ট হবে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। জানি আমার মেয়ে আর হয়তো কোনদিন ফিরে আসবেনা।'
স্ক্রাব টাইফাস এর আগে মুর্শিদাবাদে আরও দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার বহু মানুষ অজানা রোগে আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে জেলার পঞ্চায়েতগুলি আবর্জনা সঠিকভাবে পরিষ্কার করছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাদের কথায় এক-দু'দিন স্প্রে করা ছাড়া আর তেমন কোনও উদ্যোগ নেই পঞ্চায়েতগুলির।