Cyclone Yaas Digha: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস তাণ্ডব শেষ। কিন্তু বাংলার উপকূলীয় অঞ্চলে জীবনযাত্রা ফের তছনছ হয়েছে। বলা যায় 'ঘূর্ণির' মধ্যে রয়েছে তাঁদের জীবন, মাথা গোঁজার ঠাই। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার শঙ্করপুরের গ্রামের চিত্র দেখে বোঝার উপায় নেই কোথায় গোটা এলাকা। বন্যায় ডুবেছে একাধিক গ্রাম। সমুদ্রের জলে ডুবেছে কৃষি জমি। কড়াল গ্রাসে বিপর্যস্ত জনজীবন।
Advertisment
তিলে তিলে নিজের জমি, বাড়ি-ঘর তৈরি করেছিলেন ৬৭ বছর বয়সি উমাকান্ত জানা। ইয়াস ঘূর্ণিঝড় আর উত্তাল সমুদ্র কেড়েছে সব। ষাটোর্ধ্ব বলেন, "আমার সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। জমি সব জলের তলায়। আমার যা যা ছিল সব কেড়ে নিয়েছে সমুদ্র।" বলতে বলতে ভিজে যায় চোখের কোল, গলা ধরে আসে উমাকান্তের। কষ্ট চেপে বলে চলেন, "আমি বহু ঘূর্ণিঝড় ঝড় দেখেছি কিন্তু এমন ঢেউ আর জলোচ্ছ্বাস কখনও দেখিনি।"
জলোচ্ছ্বাসে জীবনের শেষ উচ্ছ্বাসটুকুও কেড়েছে দীঘা এবং সংলগ্ন এলাকাবাসীর। প্রাণে বাঁচতে যেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেই স্কুলবাড়িও জলের তলায়। পেশায় জেলে শান্তিরাম মন্ডল (৫৩) বলেন, "আমার পরিবাকে নিয়ে কোনওরকমে বেরিয়ে এসেছি। মাটির বাড়ি আমাদের যেকোনও মুহুর্তে ভেঙে পড়ত।"
সাইক্লোনের বেশিরভাগ দাপটই দেখেছে ওড়িশা। কিন্তু যে ছোঁয়া এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরে তাতেই ধ্বংস হয়েছে একের পর এক গ্রাম। বাঁধ ভাঙা ঢেউয়ে ভেসেছে উপকূলীয় এলাকা। মন্দারমনির এক পুলিশ অফিসার জানান যে এই বাঁধ মেরামত করতে তাঁদের অনেকদিন অপেক্ষা করতে হবে।
মৌসম ভবনের সতর্কবার্তা পেয়েই মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছে প্রশাসন। কিন্তু বাসিন্দাদের গলায় ক্ষোভ শোনা গেল। কাদুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিন সন্তানের মা লক্ষ্মী মাঝি বলেন, "প্রশাসনের কেউ এখনও আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। আমি ক্ষুধার্ত হয়ে রয়েছি। আমার বাচ্চারাও অনাহারে। বলা হয়েছিল স্কুল ক্যাম্পে যেতে। এই জল পেরিয়ে কীভাবে যাব? যেতেও ৩০ মিনিট লাগে। বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়া কি সম্ভব?"