আজ ভোগান্তি হলেও, আগামী সপ্তাহ থেকে রোজকার যাতায়াতে কোনো সমস্যা হবে না বলে আশ্বাস রেল কর্তৃপক্ষের। সপ্তাহের শুরুতে প্রায় গোটা আপ- ডাউন মিলিয়ে গোটা চল্লিশেক ট্রেন বাতিলে সমস্যার মুখোমুখি নিত্যযাত্রী। জানা যাচ্ছে, মূলত, নৈহাটি লোকালই বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া, কল্যানী সীমান্ত, মাতৃভূমি রানাঘাট, কৃষ্ণনগর সিটি, কিছু লোকাল ট্রেন বাতিল রয়েছে। একইসঙ্গে, পথ বদল করা হয়েছে একাধিক এক্সপ্রেসের। বালিয়া, পাটনা, গৌর, জসিডি, গঙ্গাসাগর এক্সপ্রেস দমদমের পর বরানগর দক্ষিণেশ্বর হয়ে ডানকুনি লাইন ধরবে। ডানকুনি স্টেশনে দাঁড়াবে প্রতিটি এক্সপ্রেস।
সোমবার থেকে ভিড় সামাল দিতে রেল একাধিক পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু তাতেও ভোগান্তির শেষ নেই। যথা সময়ে ট্রেন না পেয়ে দিশেহারা নিত্যযাত্রী। স্টেশনে দাড়িয়ে থাকা নৈহাটি-শিয়ালদহ যাত্রী অমল কান্তি পাল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "নৈহাটি থেকে কলকাতা আসতে আমি নাজেহাল হয়ে গিয়েছি। ব্যারাকপুর থেকে লোকাল দিলে অনেক সুবিধা হয়। এদিকে টালা ব্রিজ বন্ধ। দমদম এসেও মেট্রো ধরতে পারব না। সাতদিন কীভাবে রোজ অফিস করব জানি না"।
ট্রেন থেকে নেমে শ্যামলী রায় জানান, "ভাগ্য ভালো ছিল ট্রেন পেয়ে গিয়েছি। কিন্তু ট্রেন যা ভিড় হয়েছে তাতে যেকোনা মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। ট্রেন বাতিল জানি, কিন্তু কখন কোন ট্রেন আছে, সেটি জানতে পারলে ভালো হয়"।
এদিকে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, প্রতিদিন শিয়ালদহ-নৈহাটি ১২৫ জোড়া ট্রেন চলে। তার মধ্যে মাত্র পঁচিশ জোড়া ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। মূলত, ব্যস্ত সময় এড়িয়ে তুলনামূলক ভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন বাতিল করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে"।
তিনি আরও বলেন, কাজ হচ্ছে ইছাপুর থেকে নৈহাটির মধ্যে। সুতরাং চাহিদা থাকলেও এই সাতদিন ব্যারাকপুর থেকে ট্রেন দেওয়া সম্ভব নয়।কিন্তু এখন ভেগান্তি হলেও, আগামীদিনে কোনোও সমস্যা হবে না। একইসঙ্গে কোনো ট্রেনকে গ্যালোপিন রাখা হয়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১২ কোচের ট্রেন রাখা হয়েছে। নয় বগি প্রয়োজন না হলে রাখা হয়নি। এছাড়া দুটো ট্র্যাককে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। কোনে লাইনে ভিড় থাকলে পিছনের ট্রেনকে ক্রসিং থেকে অন্য লাইনে ট্রান্সফার করে দেওয়া হবে।
এদিকে জানা যাচ্ছে, উত্তর শহরতলির যাত্রীদের কথা ভেবে রবিবার থেকে মেট্রোয় নোয়াপাড়াগামী ট্রেনের সংখ্যা এবং সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, সকালে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে নোয়াপাড়া থেকে দমদমের দিকে ৪ টি ট্রেন চালানোর পাশাপাশি কবি সুভাষ থেকে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ছাড়া শেষ ট্রেনটিও নোয়াপাড়া যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, অটোমেটিক সিগন্যালের কাজের জন্য গতকাল মধ্যরাত থেকে শিয়ালদহের উত্তর শাখায় একাধিক ট্রেন বাতিল। অনেক ট্রেনেরই রট পরিবর্তনও করা হয়েছে। ইছাপুর -শ্যামনগর-কাকিনারা-নৈহাটিতে অটোমেটিক সিগন্যাল এর কাজের জন্য ও কাকিনারা-নৈহাটি চতুর্থ লাইনে যুক্ত করার জন্য ৯ তারিখ রাত ১২ টা থেকে ১৬ তারিখ রাত ১২ টা পর্যন্ত ওই রুটের ৩০০-রও বেশি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।