ফের সরকারি উদ্যোগে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সাক্ষী হতে চলেছে শহর কলকাতা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটায় সিএমআরআই হাসপাতালে ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয় বছর কুড়ির এক তরুণের। নাম সজল রায়। অঙ্গ দান করার সিদ্ধান্ত নেন সজলের পরিবার। চিকিৎসকদের মতে, তাঁর দান করা অঙ্গে বদলে যেতে পারে ছ'টি জীবন।
সজলের জ্যাঠামশাই অমিত কুমার কর জানান, সিএমআরআই হাসপাতালের চিকিৎসক অনির্বাণ কর সজলের পরিবারকে জানান, ব্রেন ডেথ হয়ে গেলেও বয়স কম থাকার কারণে বাকি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভালো আছে। এই অঙ্গ অন্য কারোর শরীরে প্রতিস্থাপন করলে স্বাভাবিক জীবন কাটাতে, এমনকি প্রাণ ফিরে পেতে পারেন অনেকে। তখনই অঙ্গ দানের সিদ্ধান্ত নেন পরিবার।
সজলের ব্রেন ডেথের পর তাঁর শরীর থেকে লিভার, কর্নিয়া, কিডনি, সংগ্রহ করা হয়। সূত্রের খবর, একটি কিডনি সিএমআরআই হাসপাতালেই প্রতিস্থাপিত করা হবে। অন্য কিডনি পৌঁছে যাবে অ্যাপোলো হাসপাতালে। লিভার প্রতিস্থাপন হবে এসএসকেএম হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: “চিকিৎসার জন্য আর দক্ষিণ ভারতে যাওয়ার দরকার হবে না”
অন্যদিকে আজ সকালে গ্রিন করিডোর করে জীবনদায়ী হৃদযন্ত্র এসে পৌঁছয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বেলা বারোটা নাগাদ ডাঃ প্লাবন মুখোপাধ্যায় সহ চিকিৎসকদের একটি দল মুর্শিদাবাদের হবিব উল রহমানের শরীরে হৃদ প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার শুরু করেন। সজলের দুটি চোখের কর্নিয়া সংগ্রহ করেছে শংকর নেত্রালয়। সবকটি অঙ্গ গ্রিন করিডোরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলিতে আনা হবে।
মেডিক্যাল কলেজের সুপার ডাঃ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানান, "দ্বিতীয়বার মেডিক্যাল কলেজে হৃদ প্রতিস্থাপন হচ্ছে। গতবার রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ভারতে প্রথম সরকারিভাবে হৃদ প্রতিস্থাপন হয় কলকাতা শহরের হাসপাতালে। যাঁর শরীরে হৃদ প্রতিস্থাপন করা হয়, তাঁর ৫০ শতাংশের বেশি স্পদন ব্যহত হয়ে গিয়েছিল, বলতে গেলে হৃদযন্ত্র প্রায় অকেজো হয়ে যাওয়ায় শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল তাঁর। তখনই ডাক্তাররা সিদ্ধান্ত নেন হৃদ প্রতিস্থাপনের।"
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হৃদযন্ত্র পাওয়া গেলেও তা রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়। হৃদযন্ত্রের প্রয়োজন রয়েছে এরকম কিছু রোগীর নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। হৃদযন্ত্র পাওয়া গেলে যাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়, তাঁকেই দেওয়া হয়। আজ মুর্শিদাবাদের হবিব উল রহমানের সঙ্গে ম্যাচ করে যায় যন্ত্র। তাই তাঁকে প্রতিস্থাপনের জন্য বেছে নেওয়া হয়। উল্লেখ্য, এবারেও সমস্ত প্রক্রিয়াটি বিনামূল্যেই সম্পন্ন করা হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালে এই প্রক্রিয়ার খরচ আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা।