অবশেষে বিশেষ নিরাপত্তা পেলেন আইএসএফ নেতা তথা বাম-কংগ্রেস সমর্থিত এই সংগঠনের একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। রবিবার বিকেল চারটের সময় তাঁর বাড়িতে এসে পৌঁছয় সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ)-এর সাত সদস্যের একটি দল। দলটির জওয়ানরা নওশাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তবে, কোন ক্যাটাগরির নিরাপত্তা সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেই নওশাদ জানিয়েছেন। রবিবার একথা জানিয়ে তিনি আশা ব্যক্ত করেন যে সোমবার হয়তো কী ধরনের নিরাপত্তা, সেই ব্যাপারে পুরোপুরি জানতে পারবেন। কারণ, সোমবার তাঁর নিরাপত্তার বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি আছে।
নওশাদের অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই আশঙ্কায় ভুগছিলেন যে খুন হয়ে যেতে পারেন। সেই অনুযায়ী তিনি রাজ্য সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। কিন্তু, চাইলেও তাঁকে উপযুক্ত নিরাপত্তা রাজ্যের তৃণমূল সরকার দেয়নি। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তা চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে হাজারো কথা বললেও কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি। উলটে, বিজেপি নেতাদের কথামতো রাতারাতি গেরুয়া শিবিরের বি, সি, ডি ক্যাটাগরির নেতাদের জন্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে মোদী সরকার।
এই পরিস্থিতিতে তাঁর নিরাপত্তার সমস্যা বাড়তে শুরু করে বলেই নওশাদ জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস খোলা মনে আইএসএফকে গ্রহণ করেনি। সংখ্যালঘুদের যে সমর্থন তৃণমূল এতদিন একচেটিয়া পাচ্ছিল, আইএসএফ তৈরি হওয়ায়, তাতে বিরাট বিভাজন তৈরি হয়। রাজ্যের সংখ্যালঘুদের এক বিরাট অংশের সমর্থন চলে যায় আইএসএফের দিকে। আর, তাতেই ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস বিভিন্ন এলাকায় আইএসএফ কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বেশ কয়েকজন আইএসএফ সমর্থক খুনও হন রাজ্যের নানা জায়গায়। সাম্প্রতিক সময়ে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে আক্রান্ত হন আইএসএফ নেতা-কর্মীরা।
আরও পড়ুন- জাতীয়তাবাদী মুসলিম অপছন্দ, বোমা বানানোয় ওস্তাদ সংখ্যালঘু চান মমতা, কটাক্ষ নৌশাদের
এই পরিস্থিতিতে আইএসএফ নেতা-কর্মীদের ভরসার পাত্র হয়ে ওঠা নওশাদ দলের কর্মী-সমর্থকদের কথা ভেবেই নিরাপত্তার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। যার জেরে হাইকোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে নওশাদের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল। সেইমতো সাত জওয়ানের বাহিনী রবিবার নওশাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।