Bangladesh Violence: পেট্রাপোল বন্দরে বাড়ানো হল নিরাপত্তা, কড়া নজরদারি বিএসএফ-র। ছাত্র আন্দোলনে জেরে প্রধানমন্ত্রীর পথ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ শেখ হাসিনা। তারপরেই বিএসএফের পক্ষ থেকে সীমান্তে হাই এলার্ট জারি করা হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল বন্দরে আঁটোসাটো করা হয়েছে নিরাপত্তা। নজরদারিতে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি বিএসএফ ফোর্স।
বিএসএফের পক্ষ থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত লাগোয়া সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের সরিয়ে দিয়েছেন। বন্ধ হয়ে গিয়েছে যাত্রী পারাপার। যাত্রীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের যাওয়ার জন্য পেট্রাপোল সীমান্ত এসেছিলেন কিন্তু বিএসএফের পক্ষ থেকে তাদের যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তারা বলছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি খারাপ হয় তাদের যেতে দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বন্ধ হয়ে গেল মালদার ভারত - বাংলাদেশের মহদিপুর এলাকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্ত। এমনকি বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির তৈরি হওয়ার পরেও ওপারের পানামা স্থলবন্দরে আটকে রয়েছে প্রায় দেড়শ জন ভারতীয় লরি চালক এবং খালাসী। তাদেরকেও সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর তদারকিতে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি মালদার ভারত - বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে রীতিমতো পুলিশ ও বিএসএফের নজরদারি আরো জোরদার করা হয়েছে। তবে ওপার বাংলা থেকে সীমান্ত দিয়ে যাতে বৈধভাবে নাগরিকেরা সুষ্ঠুভাবে ভারতে ফিরতে পারেন, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন দপ্তরগুলি।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে দেওয়ার পর চরম অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয় ওপারে। সেই দিকেই নজর রেখেই মালদার ইংরেজবাজার ব্লকের মহদিপুর এলাকার ভারত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্ত আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়। যদিও রপ্তানি কারকদের সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহদীপুর সীমান্তের ওপারের সামান্য দূরে রয়েছে বাংলাদেশের পানামা আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর। সেখানেই ভারতের অসংখ্য লরি নিয়ে চালক ও খালাসীরা আটকে রয়েছেন। তাদের কিভাবে ফেরানো যায় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ভারতীয় লরি চালক রহমান শেখ বলেন, এদিন পাথর নিয়ে বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। আমার মতো ভারতীয় প্রায় দেড়শ জন লরি ও চালক খালাসীরা বাংলাদেশের পানামা সীমান্তে আটকে রয়েছে। সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আমরা পানামা সীমান্ত থেকে হেঁটে ভারতে প্রবেশ করেছি। বিএসএফ আমাদের সাহায্য করেছে। লরি নিয়ে আসতে দিচ্ছে না ওপারের সীমান্ত বাহিনী কর্তারা। আমার মতো এরকম অনেক ভারতীয় লরিচালক ও খালাসীর আটকে রয়েছেন। তাদের এপারে আসার ব্যবস্থা করুক সরকার।
অন্যদিকে প্রায় দেড় মাস আগে ভারতের ব্যাঙ্গালোরে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন বাংলাদেশি নাগরিক শাওন হক। এদিন তাঁর বাংলাদেশের ফিরে যাওয়ার কথা। পাসপোর্ট ভিসা নিয়ে সীমান্তে এসে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা শুনে কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও , শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বাসিত হয়েছেন।
মহদিপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, আপাতত তিন দিনের জন্য মহদিপুর এলাকার ভারত - বাংলাদেশ বাণিজ্য সীমান্ত বন্ধ রাখা হয়েছে । ওপার বাংলায় যেসব ভারতীয় লরিচালক ও খালাসীরা রয়েছেন তারা যাদের সুষ্ঠুভাবে দেশে ফিরতে পারেন সে ব্যাপারেও প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশের নতুন সরকার গড়তে চলেছে। আপাতত সেনাবাহিনী নেমেছে বাংলাদেশে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর কাস্টমস্ অফিসারদের নির্দেশ মতোই নতুন করে সীমান্তের বাণিজ্য রপ্তানি চালু করা হবে।
মহদিপুর ভারত - বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত শুল্ক দপ্তরের অধিকর্তা দেশদুলাল চ্যাটার্জি বলেন , এই সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য রপ্তানিতে ভারত সরকারের প্রতিদিন গড়ে, ১৫ থেকে ২৯ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয় । তবে প্রথম থেকে একটা ধারণা ছিল বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। যেটা এদিন ঘটলো। তবে সীমান্তে পচনশীল পণ্য সামগ্রীর মধ্যে পিঁয়াজের কিছু গাড়ি রয়েছে। যেগুলি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া বেশিরভাগই পাথরের গাড়ি। যেকোনো মুহূর্তে সীমান্তে বাণিজ্য রপ্তানি বন্ধ হতে পারে, এরকম বার্তা আগে থেকেই জানানো হয়েছিল। ফলে পচনশীল দ্রব্যের মধ্যে তেমন কিছু কাঁচামাল নেই। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।