ঘটনার ভয়বহতা যেকোনও গল্পকেও হার মানায়। ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে এমন ঠান্ডা মাথায় খুনের ঘটনায় শনিবার অভিযুক্ত তপন বাগকে ফাঁসির আদেশ দিল শ্রীরামপুর আদালত। অপর দুই অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেন আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক মহানন্দ দাস। গত ২৭ জানুয়ারি চুঁচুড়া আদালতেও এই মামলায় ফাঁসির রায় দিয়েছিল আদালত।
ঠিক কী ঘটেছিল?
ঘটনাটি ২০০৮ সালের। উত্তরপাড়া থানা এলাকার ব্যবসায়ী শৈলেন্দ্র কুমার শর্মা নিজের কারখানা চালাতে না পেরে তা লিজ দেন চন্ডীতলার তপন বাগ নামের এক ব্যক্তিকে। কিন্তু সময় মত লিজের টাকা না পাওয়ায় ক্রমাগত তপনবাবুকে তাগাদা দিতে করতে শুরু করেন শৈলেন্দ্র। পুলিশি জেরায় তপন জানায়, মাঝে মধ্যে বাড়ীতে ডেকে কিছু টাকাও সে দিত শৈলেন্দ্র শর্মাকে। কিন্তু তাগাদার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় একদিন টাকা দেওয়ার অছিলায় চন্ডীতলায় নিজের বাড়ীতে শৈলেন্দ্রকে ডেকে পাঠায় তপন। এরপর তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয় সেখানেই, এমনটাই খবর পুলিশ সূত্রে। এই ঘটনায় তপনকে সাহায্য করে তার বাবা-মা নিরঞ্জন বাগ ও সন্ধা বাগ।
অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা আদালতের। ছবি- উত্তম দত্ত
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রসংগীতকে অশালীনভাবে বিকৃতি! মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা মালদার ৪ ছাত্রীর
এদিকে শৈলেন্দ্র বাড়ি না ফেরায় খোঁজ খবর শুরু করেন তার স্ত্রী ইন্দু শর্মা। উত্তরপাড়া থানায় অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। ঘটনায় তদন্তে নেমে তপন বাগের বাড়ির পাশের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে পুলিশ উদ্ধার করে শৈলেন্দ্রর পচা-গলা মৃতদেহ। প্রথমদিনেই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে আটক করা হয় তপন বাগকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ধনেখালি এলাকা থেকে উদ্ধার করার হয় শৈলেন্দ্রর মোটরবাইক ও জিনিসপত্র। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে তদন্তে নামে সি আই ডি।
আরও পড়ুন: এশিয়ায় প্রথম হাত বদল! শ্রেয়ার শরীরে শচীনের হাত
ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে আজ শ্রীরামপুর আদালতে অভিযুক্ত তপন বাগকে ফাঁসির সাজা শোনান বিচারক মহানন্দ দাস। একই সঙ্গে তাঁকে এই খুনে সাহায্য করার অপরাধে তপনের বাবা-মাকেও যাবজ্জীবন সাজার আদেশ দেন বিচারক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন