রেশন দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সল্টলেকের বাড়িতে ইডি-র তল্লাশির প্রায় ছয় ঘন্টা পার। ঘড়ির কাঁটায় তখন বেলা পৌনে একটা। হঠাৎই মন্ত্রীর বাড়ির সামনে একটা এসইউভি গাড়ি এসে থামল। কে এল? উৎসাহী জনতার প্রবল উৎসাহ। গাড়ির দরজা খুলতেই নজরে পড়ল বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্তকে। মিষ্টির প্যাকেট হাতে বনমন্ত্রীর বাড়িতে এসেছেন তিনি। জানালেন বিজয়া করতেই এসেছেন তিনি।
মন্ত্রীর বাড়ির দরজা বন্ধ। আগলে রয়েছেন সিআরপিএফ জওয়ানরা। সব্যসাচী ঢুকে যেতেই বাধা দেন আধা সামরিক বাহিনীর কর্মীরা। এরপরই সব্যসাচী দত্ত নিজের পরিচয় দিয়ে জওয়ানদের জানান, তিনি বিজয়া করতে মন্ত্রীর কাছে এসেছেন। কিন্তু, জওয়ানরা তা শুনে দরজা খোলেননি। উল্টে তারা শীর্ষ ইডি আধিকারিকদের থেকে জানতে যান তাদের করণীয়।
ফিরে এসে সিআরপিএফ জওয়ানরা সব্যচাসীকে বলেন, 'ইডি কর্তারা নিষেধ করেছেন কাউকে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দিতে।' জবাবে সব্যসাচী দত্ত বলেন, 'আমি শুধু বিজয়া করব। আর এই মিষ্ঠির প্যাকেটটা দেব। প্রয়োজনে এই প্যাকেট খুলে আপনিও তল্লাশি করতে পারেন। দেখতে পারেন মিষ্টিই রয়েছে কিনা।' তাতে রাজি হননি জওয়ানরা। পাল্টা বিধাননগরের চেয়ারম্যানকে বলেন, 'আপনি যাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন তিনিও সাক্ষাৎ করতে চাইছেন না, কাউকে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন।'
আরও পড়ুন- ‘বালু যদি মারা যায়…’, ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি মমতার
এরপর সব্যসাচী মন্ত্রীর বাড়ির সামনে থেকে চলে যান। যেতে যেতে বলেন, 'তল্লাশি তল্লাশির মত হত, আইন আইনের পথে চলবে। আমার তাতে কিছ বলার নেই। কিন্তু বিজয়া করতে দিতে অসুবিধা কি তা বুঝতে পারছি না।'
সব্যসাচী দত্ত যাওয়ার মিনিট খানেকের মধ্যে বনমন্ত্রীর বাড়ির সামনে হাজির হন বিধাননগর পুরসভার বেশ কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলর। তাঁরাও বিজয়া করার জন্য মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাইছিলেন। একই কথা জওয়ানরা ওই কাউন্সিলরদেরও বলে। পরে এক ইডি আধিকারিক কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলেন। জানান, অনুমতি না থাকলে তল্লাশির সময় কেই বনমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকতে পারবেন না।
যা শুনে বিধাননগর পুরসভার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তুলসী সিনহা বলেন, 'বাঙালি ঐতিহ্য মেনেই গুরুজনের সঙ্গে বিজয়া করতে এসেছিলাম। কিন্তু এরা আমাদের বাঙালি সংস্কৃতিতে আঘাত হানছে।' অর্থাৎ এক্ষেত্রে বাঙালির সংস্কৃতি বনাম ইডি তল্লাশি-র বিষয়টি উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করলেন তৃণমূলের একাংশ।