সেবক- রংপো রেলপথের কাজের গতি নিয়ে সরসরি রাজ্যকেই দূষল রেল। রাজ্য চাইলেই দ্রুত কাজ শেষ করা সম্ভব বলে দাবি ভারতীয় রেলের কর্তাদের। শুধু তাই নয় জমিজট মেটাতে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে রেল। এদিকে পাল্টা দাবি রয়েছে রাজ্যেরও। জাতীয় স্বার্থে কাজ করতে গিয়ে জমিজট মেটাতে কেন্দ্রেরও হস্তক্ষেপ চেয়েছে মমতা সরকার। এ সবের মাঝে সেবক- রংপো রেলপথের কাজ নিয়ে কেন্দ্র কিংবা রাজ্য কেউই যে নিজের ঘাড়ে দায় নিতে চাইছে না তা একপ্রকার স্পষ্ট।
২০০৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সেবক - রংপো রেলপথের কাজের শিলান্যাস করেন। প্রায় ১৩৪০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি, তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের বর্তমান পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। প্রায় ৫২ কিলোমিটার এই রেলপথে মোট ২৪ টি সুড়ঙ্গ থাকছে। পাঁচ বছরের মধ্যেই কাজ শেষ করার কথা ছিল। সেইমতো সিকিমের দিক থেকে রেলপথের কাজ শুরু করে দেয় রেল। কিন্তু এন ও সি ( No objection certificate) না থাকায় সিকিম- বাংলা সীমানায় এসে থমকে যায় কাজ। পুর্নবাসনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে দেন এলাকার ২৪টি বনবস্তির বাসিন্দারা। অন্যদিকে রাজ্যের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তেই তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করে এনওসি দিতে অস্বীকার করেন তৎকালীন জিটিএ-র চেয়ারম্যান বিমল গুরুং।
আরও পড়ুন, কামেরে, থাসা- দায়িত্বশীল পর্যটন ও স্বপ্নদের সত্যি হয়ে ওঠার কাহিনি
বিমল পাহাড় ছাড়া হওয়ার পরে বিনয় তামাংকে জিটিএ-র চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে এনওসি আদায় করে রাজ্য। এরপরেই বনবস্তিবাসীদের আন্দোলন আরো জোরালো হয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পরিবেশ প্রেমীরা বনবস্তিবাসীদের পাশে এসে দাঁড়ান। ফলে কোনভাবেই পশ্চিমবঙ্গে কাজ শুরু করতে পারেনি রেল। সম্প্রতি এই রেলপথের কাজ খতিয়ে দেখতে শিলিগুড়িতে আসেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার সঞ্জীব রায়। দুদিনের সফরে তিনি সিকিমে যান। সেখানে সিকিম সরকারের সঙ্গে কথা বলেন এবং রেলপথের কাজ খতিয়ে দেখেন। সেখান থেকে ফিরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি সরাসরি রাজ্যের কোর্টেই বল ঠেলে দেন। সঞ্জীব রায় বলেন, "জমিজটের জন্যে কাজ আটকে রয়েছে। রাজ্য যত তাড়াতাড়ি জমি দেবে তত তাড়াতাড়ি আমরা কাজ করতে পারব। রাজ্য চাইলেই দ্রুত কাজ হবে। বিষয়টি আমরা রাজ্যের নজরে এনেছি। আশা করি রাজ্য কোন না কোন ব্যবস্থা করবে।’’
রংপো-সেবক রেলপথের জন্য প্রয়োজনীয় জমিজট ছাড়াতে রাজ্যের উপরেই দায় চাপাচ্ছে রেল pic.twitter.com/Ha159KATqi
— IE Bangla (@ieBangla) October 25, 2018
এই বিষয়ে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য চায় দ্রুত কাজ শেষ হোক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকল্পের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু জাতীয় স্বার্থে কোন কাজ করতে গেলে রেলকেও পুর্নবাসনের কথা ভাবতে হবে। আর তাছাড়া ওঁরা কোন পর্যায়ে আলোচনা করেছে জানিনা। স্থানীয় পর্যায়ে আলোচনা হলে আমরা সাহায্য করতে পারতাম। কিন্তু ওঁরা আমাকে সেরকম কিছু বলেননি। আমি মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিবের নজরে বিষয়টি আনব।'