লকডাউনে একেবারে অন্য ধরনের উদ্যোগ এসএফআইয়ের। প্রয়োজনের ভিত্তিতে বাড়ি বাড়ি স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছে দিচ্ছে সিপিআইএমের এই ছাত্র সংগঠন। কলকাতা, শহরতলী ও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই পরিষেবা দিচ্ছে এসএইআইয়ের সদস্যরা।
যাদবপুরের বাসিন্দা মৌমিতা চক্রবর্তী লকডাউনের মধ্যে অঞ্চলের বিভিন্ন ওষুধের দোকানে স্যানিটারি ন্যাপকিনের খোঁজে একাধিকবার গিয়েছিলেন। কিন্তু, স্টক নেই বলে প্রতিবারই ফিরে আসতে হয় তাঁকে। বন্ধ অনলাইন পরিষেবাও। ফলে, দুর্দশা আরও বাড়ে মৌমিতার। এরপরই সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট তাঁর নজরকাড়ে। দেখেন, স্টুডেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (এসএফআই) তরফে বলা হয়েছে, যেকোনও প্রয়োজনে যেন তাদের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেই পোস্টে ফোন নম্বরেরও উল্লেখ ছিল। দেরি করেননি যুবতী মোমিতা। এক ফোনেই মুশকিল আসান হয়েছে। ১২ ঘন্টার মধ্যেই স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছে গিয়েছে মৌমিতার হাতে। মৌমিতার ঘটনা একটা উদাহরণ মাত্র। কলকাতা সহ জেলা জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে এরকম একাধিক উদাহরণ।
এসএফআইয়ের তরফে বলা হয়েছে, লকডাউন ঘোষণার পর গত মাসের ২৫ তারিখ থেকেই মহিলাদের সুবিধার্থে স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছনোর কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৫ হাজার ন্যাপকিন বিক্রি করেছে সংগঠনটি। তবে, যেসব মহিলাদের কেনার সামর্থ নেই তাঁদের বিনামূল্যেই ন্যাপকিন দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন- রাজস্ব তলানীতে, কঠোর ব্যয় সঙ্কোচের পথে মমতা
গ্রামীণ মহিলাদের হাতে স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছে দেওয়াই আগ্রাধিকার সংগঠেনর সদস্যদের। এসএফআইয়ের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা ঋতুপর্ণা মিত্রের কথায়, 'শহরে তাও ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে। এখানে ঋতুচক্র নিয়ে ছুতমার্গও তুলনায় কম। কিন্তু, গ্রামের মহিলাদের পক্ষে পরিস্থিতি জটিল। তাই আমাদের আগ্রাধিকার গ্রামে গ্রামে সুবিধা পৌঁছে দেওয়া।' তবে, প্রয়োজন পড়লেই সমাজের সব স্তরের মানুষ তাঁদের ফোন করে ডাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন ঋতুপর্ণা। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৬ থেকেই স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে মহিলাদের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে। লকডাউনে মানুষের হয়রানির কথা চিন্তা করে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজে লাগানো হয়েছে সোশাল মিডিয়াকে।
এসএইআইয়ের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদিকা তনুশ্রী মণ্ডল বলেন, 'যেসব মহিলার ক্রয় ক্ষমতা আছে আমরা শুধু তাঁদের থেকেই স্য়ানিটারি ন্যাপকিনের জন্য টাকা নিচ্ছি। বাকিটা সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।' প্রস্তুতকারী বিভিন্ন সংস্থার থেকে পাইকারি দরে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনছে এসএফআই। সোশাল মিডিয়ায় সংগঠনের পোস্ট দেখে রাজ্যের ভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক প্রস্তুতকারীরাই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে দাবি করেন তনুশ্রী।
এই কাজের জন্য জেলা জেলায় এসএফআইয়ের বিশেষ দল কাজ করছে। সংগঠনের বহু পুরুষ সদস্যও এই উদ্যোগে শামিল হয়েছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন