বাম ছাত্র, যুবদের ইনসাফ সভায় মঙ্গলবার বিরাট ভিড় জমেছিল। পুলিশও কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছিল। যা দেখে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মমতা সরকার বিরোধীদের আন্দোলনের পরিসর দিয়েছে। যা আদতে শাসক দল ও প্রশাসনের কৌশলী অবস্থান। মঙ্গলের এই ব্যাখ্যাকেই যেন মান্যতা দিল বুধে করা বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদের মন্তব্য। ফলে এখন চর্চায় বঙ্গের বিরোধী রাজনীতিতে কোন দল জোড়-ফুলের কাছে বেশি প্রাসঙ্গিক।
মঙ্গলবার তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবি করেছিলেন যে, '২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর এটাই বামেদের বৃহত্তম সমাবেশ।' আর বুধবার তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বললেন, 'শূন্য থেকে ছাত্র, যুবদের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে সিপিআইএম। বিজেপির নবান্ন অভিযান দেখে বামেরা ইনসাফ সমাবেশ করল। বিজেপির থেকে ওদের ছাত্র, যুবদের সমাবেশ বেশি ভিড় হয়েছে। যেটা দেখে আমি খুশি।'
একই সঙ্গে সৌগত রায়ের সাফ কথা, 'বিজেপি শক্তিশালী হওয়ার চেয়ে বামেরা শক্তিশালী হওয়া ভাল।' কেন হঠাৎ বামেদের শক্তি বৃদ্ধির প্রশংসায় বর্ষীয়ান এই তৃণমূল সাংসদ? সৌগত রায়ের জবাব, 'একটা রাজনীতি ওরা করছে, যা আসলে আধা সাম্প্রদায়িক। মুসলিম সমাজকে আকৃষ্ট করার জন্যই করেছে। মূলত সেলিম আইএসএফ ও ফুরফুরা শরিফদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু আইএসএফ এখন দুর্বল হয়ে গিয়েছে। এটা ওদের বুঝতে হবে। কিন্তু তাও বলব, বিজেপি শক্তিশালী হওয়ার চেয়ে বামেরা শক্তিশালী হওয়া ভাল। কারন বামেরা খুব অত্যাচারী, অগণতান্ত্রিক হলেও ওরা সাম্প্রদায়িক নয়, ধর্মনিরপেক্ষ। মন্দিন, মসজিদ নিয়ে বামেরা রাজনীতি করে না।'
বামেরা গত লোকসভা ও বিধানসভায় শূন্য। বিরোধী এখন শুধুই বিজেপি। বাম ভোট রামমে গিয়েছিল। তবে, সময়ের সঙ্গে সেই প্রবণতায় বদল ঘটছে বলে রাজনীতির কারবারিদের মত। তৃণমূলও কী চিরাচরিত বিরোধী ভোট ভাগাভাগির লক্ষে বিজেপির তুলনায় বামেদের বিরুদ্ধে লঘু সুরে চড়াওয়ের পক্ষে? সৌগত রায়ের মতে, 'মুসলিম সমাজ জানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যাই ওদের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারেন। তৃণমূল কংগ্রেস সংখ্যালঘু ভোটের ৮০-৯০ শতাংশ পায়, পাবেও। বিজেপি সেখানে শূন্য। বামেরা তার থেকে যদি ৫-১০ শতাংশ ভোট পায় তাতেও তৃণমূলের অসুবিধা হবে না।'