উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের বীভৎস বিস্ফোরণে প্রথম গ্রেফতারি। বারাসতের নীলগঞ্জ থেকে পুলিশের জালে মূল অভিযুক্ত কেরামত আলির পার্টনার সফিকুল ইসলাম। এদিকে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বারাসত হাসপাতালে মৃত্যু সামসুল আলির। সোমবার সকালে বেআইনি বাজি কারখানার পিছনের দিকে মিলেছে আরও একটি ছিন্নভিন্ন দেহ।
ভয়াবহ-কাণ্ডের পরের দিন সকালেও দত্তপুকুরে বিস্ফোরণস্থল ও তার আশেপাশে গা শিউড়ে ওঠার মতো ছবি। বিস্ফোরণস্থলের ১০০ মিটার দূরে পুকুরে মিলেছে দেহাংশ। ঘটনাস্থলের ২০০ মিটার দূরের একটি জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে পোড়া পায়ের অংশ ও আঙুলের টুকরো। এছাড়াও বেআইনি বাজি কারখানার পিছনে দিকে একটি এলাকায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে মৃতদেহ। তার ৫০ মিটার দূরত্বে মিলেছে কাটা মুণ্ড। মৃতদেহ দেখে শনাক্ত করার উপায় নেই। এছাড়াও গতকাল রাতে বারাসত হাসপাতালে গুরুতর জখম সামসুল আলির মৃত্যু হয়েছে।
এই সামসুলের বাড়ি ভাড়া নিয়েই বেআইনি বাজির কারবার চালাচ্ছিল কেরামত আলি। সব মিলিয়ে দত্তপুকুর বিস্ফোরণ কাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ৯ জনের মধ্যে ৬টি দেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি। বেআইনি ওই বাজি কারখানায় মুর্শিদাবাদ থেকে বেশ কয়েকজন এসে শ্রমিকের কাজ করতেন। মৃতদেহগুলি তাঁদের হতে পারে বলে ধারমা করা হচ্ছে। মুর্শিদাবাদ থেকে শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা আজ মৃতদেহ শনাক্ত করতে আসছেন বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- কলকাতায় আজ TMCP-র সভা, বৃষ্টিতে ধুয়ে যাবে মহানগরী?
এগরার পর দত্তপুকুর। রবিবার সকালে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কার্যত ধুলোয় মিশে গেছে বেআইনি বাজি কারখানা-সহ আশেপাশের একাধিক বাড়ি। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে তার শব্দ শোনা গিয়েছে বারাসত থেকেও। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কেরামত আলির বিস্ফোরণেই মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে তার ছেলেরও। দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মোট ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম আরও বেশ কয়েকজন।
এই ঘটনায় স্থানীয় এক বাসিন্দা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারই ভিত্তিতে তদন্তে নেমে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে বারাসতের নীলগঞ্জ থেকে সফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃত সফিকুল বেআইনি বাজি কারখানার মূল পাণ্ডা নিহত কেরামাতের পার্টনার ছিল বলে পুলিশের দাবি। ধৃতকে আজই আদালতে পেশ।
আরও পড়ুন- রীতিমতো কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! দত্তপুকুর বিস্ফোরণ-কাণ্ডে উঠে এল সাংঘাতিক অভিযোগ
এদিকে, বিস্ফোরণস্থলের ১০০ মিটার দূরে পুকুরে মিলেছে পোড়া দেহাংশ। ২০০ মিটার দূরে এক জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে ছিন্নভিন্ন পায়ের অংশ ও আঙুলের টুকরো। একজায়াগায় মিলেছে মুণ্ড অন্য জায়গায় ধড়। সব মিলিয়ে দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের পরের দিন সকালেও ঘটনাস্থলে গা শিউড়ে ওঠার মতো ছবি।
পুলিশের অনুমান, ঘটনাস্থলে ঠাসা ছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্র্রেট এবং অ্যামোনিয়াম চূর্ণ। তবে পটাশিয়াম নাইট্রেট ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যেভাবে বেআইনি বাজি তৈরির ওই কারখানা ছাড়াও লাগোয়া তিন থেকে চারটি বাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে গেছে, তাতে ঘটনাস্শলে ঠিক কী ধরণের উপাদান মজুত ছিল তা ভাবাচ্ছে পুলিশকর্তাদের।