কয়েক সেকেন্ডের নিখুঁত অপারেশন। ভরসন্ধেয় পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে খুন কয়লামাফিয়া রাজু ঝা। জাতীয় সড়কের ধারে গাড়িতে চেপে এসে এলোপাথাড়ি গুলি দুষ্কৃতীদের। গাড়িতেই ঝাঁঝরা রাজু, হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা। গুলিতে জখম রাজুর ছায়াসঙ্গী ব্রতীন মুখোপাধ্যায়। রাজুর গাড়িচালকও জখম হয়েছেন। খুনের পর সম্ভবত গাড়ি ফেলে ট্রেনে পালিয়েছে আততায়ীরা, প্রাথমিক তদন্তে এমনই অনুমান পুলিশের।
কয়লা পাচারকাণ্ডে সিবিআই তদন্ত শুরুর পর থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় অনুপ মাজি ওরফে লালার গোষ্ঠী। এই সুযোগেই একুশের বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দেওয়া রাজু ফের একবার সক্রিয় হয়ে ওঠে কয়লার কারবারে। ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই এই নৃশংস খুন, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের।
পুলিশ মনে করছে শক্তিগড়ে কয়লা মাফিয়া রাজেশ ওরফে রাজু ঝার খুনের পিছনে রয়েছে সিন্ডিকেটের লড়াই। সম্প্রতি কয়লা কারবারে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে রাজু ঝা। সিবিআই কয়লা পাচারের তদন্ত শুরুর পরেই নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় অনুপ মাজি ওরফে লালার গোষ্ঠী। উল্টোদিকে এই সুযোগে ফের কারবারে সক্রিয় হয়ে উঠতে থাকে দুর্গাপুরের কয়লামাফিয়া রাজুর গোষ্ঠী। বর্তমানে ইসিএল-এর কয়লা টেন্ডারে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। রাজু কয়লা কারবারে সক্রিয় হয়ে ওঠায় কাজ করতে পারছিল না অন্য গোষ্ঠী। সম্ভবত সেই কারণেই রাজুকে খুনের ছক কষে অন্য গোষ্ঠীর লোকজন, এমনই ধারণা পুলিশের। তবে রাজু ঝা খুনের পিছনে অন্য সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। বিশেষ করে, গরুপাচারে অভিযুক্ত এনামুল ও লতিফের সঙ্গে রাজুর কোনও ধরনের যোগাযোগ ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- শক্তিগড়ে শুটআউট, নিহত কুখ্যাত কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা, জখম রাজুর এক সঙ্গী
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন রাজু ঝা। দিলীপ ঘোষের হাত থেকে পতাকা নিয়েছিলেন তিনি। বিধানসভা ভোটে বিজেপির হয়ে প্রচারেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে গত ২ বছর রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছিলেন রাজু। বর্ধমান, দুর্গাপুরের পাশাপাশি কলকাতা, বিহার, ঝাড়খণ্ডেও রাজু ঝার একাধিক বাড়ি আছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বর্তমানে দুর্গাপুরের হাডকো মোড়ের বাড়িতে বেশি যাতায়াত ছিল তাঁর।
আরও পড়ুন- আজও একাধিক জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস, এই পর্বে দুর্যোগের শেষ কবে?
কয়লা মাফিয়া রাজু খুন নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'ভোটের আগে রাজু ঝা দলে যোগ দিয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এখন বোম-বন্দুকের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কারও নিরাপত্তা নেই। সে একজন বড় ব্যবসায়ীও বটে। যেভাবে তাঁকে খুন করা হল, বাংলার আইনশৃঙ্খলা কোথায় যাচ্ছে? খুব চিন্তার বিষয়। সরকারের দায়িত্ব তাড়াতাড়ি দোষীদের গ্রেফতার করা।'