রাজ্য সরকারকে এখন পর্যন্ত পাশে না পেলেও সল্ট লেকের বিকাশ ভবনের সামনে অনশনরত রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা সমর্থন পেলেন কবি শঙ্খ ঘোষের। সরকারের উদাসীনতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলার বর্ষীয়ান কবি। অনশনরত শিক্ষকদের পাঠানো এক চিঠিতে তিনি লিখেছেন, সরকার ভুলে গেছে তার "সামাজিক দায়বদ্ধতা"। এ সপ্তাহের শুরু থেকে ন্যায্য বেতনের দাবিতে ও বেআইনিভাবে বদলির প্রতিবাদে আমরণ অনশনে বসেছেন জনা আঠারো প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা।
শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন, "আবারও কিছু ন্যায্য দাবি নিয়ে এ-রাজ্যের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা সরকারের কাছে কিছু আবেদন জানিয়েছিলেন। কোনও কোনও প্রসঙ্গে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করতে চাননি বা পারেননি সরকারপক্ষ। এটা প্রায় অবিশ্বাস্য ব্যাপার যে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা প্রায় অর্ধেক বেতন পান। শিক্ষার বা প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়ে যে কিছুমাত্র সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে - মনে হয় সে-বিষয়ে সরকার সম্পূর্ণ উদাসীন। এর প্রতিবাদে সংগতভাবেই নিপীড়িত শিক্ষক সমাজ আজ আন্দোলন করছেন। কোনও রকম সদর্থক প্রতিক্রিয়া না মেলায় শেষ পর্যন্ত আঠারোজন আমরণ অনশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আজ পাঁচদিন হল। সমস্ত নাগরিক সমাজের চোখের সামনে এটা যে ঘটতে পারছে এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু নেই। মাঝে মাঝে আমাদের নিজেদের নিতান্ত অসহায় বলে মনে হয়। তবুও আমরা শুধু এইটুকু আশা করে থাকতে চাই যে, অবস্থা-বিবেচনায় সরকারের কোনও সুচেতনা হবে এবং অবর্ননীয় দুর্দশা থেকে প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের মুক্তির একটা ব্যবস্থা তাঁরা করবেন।"
শঙ্খ ঘোষের বার্তা
এক বছর ধরে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা যোগ্যতা অনুযায়ী ন্যায্য বেতন কাঠামোর দাবি জানালেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে জানাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। বিভিন্ন দফতরে একাধিক চিঠি দিলেও সদুত্তর মেলেনি বলে দাবি তাদের।
অনশনরত এক শিক্ষক বলেন, "প্রতিবার বঞ্চনার মুখোমুখি হয়েছি। সমস্যা মিটবে এই আশা নিয়েই আমরণ অনশনে যোগ দিয়েছি। রাজ্য সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমাদের ১৪ জন আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে বহু দূরে বিভিন্ন জেলায় বদলি করে দিয়েছে। এর প্রতিবাদেই আমরা আজ পথে নেমেছি।"
গত ১২ মে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিধানসভা থেকে উস্থি প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনকে ফিরিয়ে দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে বিধাননগর উন্নয়ন ভবনের সামনে অবস্থানে বসেন সংগঠনের সদস্যরা। সেখান থেকেই তাঁরা আমরণ অনশনের ডাক দেন।