ফের বিস্ফোরক দাবি করলেন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। সিজিও কমপ্লেক্স থেকে আদালতের পথে যাওয়ার সময় বলাগড়ের তৃণমূল নেতা সাফ জানিয়ে দিলেন কে এসএসসি দুর্নীতির আসল চক্রী।
কী বলেছেন শান্তনু?
শনিবার আদালত চত্বরে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছিলেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি নির্দোষ। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। আমি কিচ্ছু নিইনি।’ তবে কে বা কারা তাঁকে ফাঁসাচ্ছে তা নিয়ে সেদিন মুখ খোলেননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ হুগলির এই যুব তৃণমূল নেতা।
তবে এদিন কে তাঁকে ফাঁসাচ্ছেন তা নিয়ে মুখ খোলেন শান্তনু। বলেন, 'এই কেসের মাস্টারমাইন্ড কুন্তল ঘোষ। ও এই মিথ্যা অভিযোগ করে সকলকে ডাইভার্ট করছে। আর ওর টাকাগুলো অন্য স্টেটে সাইট করছে, অন্য স্টেটে পাঠাচ্ছে। আপনারা খৌঁজ নিন। কারোর ইন্সট্রাকশনে কাউকে টাকা দেওয়া হয়নি। ও মিথ্যা কথা বলছে।' পাশাপাশি সোমবারও শান্তনুর দাবি, 'আমি কোনও কিছুতে জড়িত নই, আগামিতে তা প্রমাণ হবে।'
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে নাম উঠে এসেছে অভিনেতা বনি সেনগুপ্তের। ইতিমধ্যেই তাঁকে জারা করেছে ইডি। বনি নিজে স্বীকার করেছেন যে, কোনও চুক্তি ছাড়াই তিনি যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। যা দিয়ে অভিনেতা একটি গাড়ি কিনেছিলেন। জানা গিয়েছে, এই মামলায় আরও তিন অভিনেত্রীর নাম উঠেছে। যা নিয়ে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমি কিছু জানি না। এসব কুন্তল বলতে পারবেন।'
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম প্রথম তুলে ধরেন এই কেলেঙ্কারিতে ধৃত তাপস মণ্ডল। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত যুব তৃণমূলের সম্পাদক কুন্তল ঘোষের সঙ্গেই শান্তনুর নামটাও বলেছিলেন তাপস মণ্ডলই। পরে ইডি গোয়েন্দারা কুন্তলকে জেরা করে তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে শান্তনুর নানা কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতে পেরেছে বলে সূত্রে খবর।
চলতি বছর জানুয়ারিতে কুন্তল ঘোষের চিনার পার্কের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। সেই সময়ই শান্তনুর বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল ইডি। সেই অভিযানেই শান্তনুর বাড়ি থেকে মেলে বহু চাকরি প্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড। তারপর থেকে অন্তত সাতবার জেরা করা হয়েছে হুগলির এই যুব তৃণমূল নেতাকে। শেষ পর্যন্ত গত শুক্রবার সকাল থেকে সাত ঘন্টা জেরা করে সন্ধ্যার পর শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি।
গত শনিবার দুপুরে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হুগলির কর্মাধক্ষ্যকে তিন দিনের ইডি হেফাজতে পাঠানো হয়। যা শেষে এদিন ফের তাঁকে আদালতে পেশ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- ‘টাকায় কেনা চাকরি’ টিকোতে মরিয়া চাকরিচ্যুতরা, আবেদন ডিভিশন বেঞ্চে