গত ৩১শে জানুয়ারি মালদহের সভা থেকে মতুয়া ধর্মগুরু গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম 'ইচ্ছাকৃতভাবে' ভুল উচ্চারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর। এমনই অভিযোগ বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা মতুয়া সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুরের। সাংসদের দাবি, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উচ্চ সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ায় তফশিলি উপজাতির ধর্মগুরুকে এইভাবে অপমান করেছেন। মতুয়া সম্প্রদায়কে ব্যবসা ও ভোট বাক্স বলে ভাবেন।'
কী বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
মালদহে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'যতদিন বড়মা বেঁচেছিলেন তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব কে নিয়েছিলেন? আমি করেছিলাম। কেউ তাকিয়ে দেখেননি। আমরা কন্যাশ্রী কলেজ করেছি। মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ, গুরুচাঁদের নামে বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে।' অভিযোগ গুরুচাঁদ বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যাোপাধ্যায় ভুল উচ্চারণ করেছেন। গুরুচাঁদের নাম নিশ্চিৎ করেও তিনি 'ভুল' বলেছেন বলে দাবি শুভেন্দু, শান্তুনুদের।
কী হুঁশিয়ারি শান্তনু ঠাকুরের?
'গুরুচাঁদকে গরুচাঁদ বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওনার ভুলে যাওয়া রোগ আছে কিনা জানি না। ভাষণের সময় পিছনে নামটি জেনেও মুখ্যমন্ত্রী ভুল বললেন। এটা সমগ্র মতুয়া সমাজ ও আমাদের আরাধ্য দেবতাকে অপমান করা হয়। ইচ্ছাকৃত ব্যাঙ্গাত্মক শব্দের জন্য ওনাকে মতুয়াদের সামনে ক্ষমা চাইতে হবে। যতক্ষণ না ক্ষমা চাইবেন ততক্ষণ ওনাকে আমাদের সমাজ ক্ষমা করবে না। আগামিদিনে মতুয়ারা ভোটবাক্সে ওনাকে জবাব দেবে।'
শুভেন্দুর কটাক্ষ-
একই ইস্যুতে মমতাকে নিশানা করেছেন বিরোদী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রীর ওই দিনের বক্তব্য পেশ করে টুইটে শুভেন্দুর দাবি, 'গুরুচাঁদের নাম বিকৃত করে মতুয়া ও নমঃশুদ্র সমাজকে অপমান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সারাজীবন মতুয়া সমাজকে ভোট ব্যাঙ্ক ভেবেছেন, মন থেকে যে সম্মান করেননি।'
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে মতুয়া অধ্যষিত বনগাঁয় জিতেছিল বিজেপি। ২০২১ সালের ভোটে তৃণমূলের ব্যাপক জয় হলেও মতুয়া প্রভাবিত বনগাঁর একাধিক বিধানসভায় পদ্ম পতাকা উড়েছিল। নদিয়াতেও একই অবস্থা। ফলে আসন্ন পঞ্চায়েত ও ২০২৪ সালের লোকসভায় মতুয়াদের মন জয়ে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী। তার মাঝেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে উঠল মতুয়াদের 'অপমান' করার অভিযোগ।