কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তিনি। সেই ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধেই এবার উঠল রেশন কার্ড জালিয়াতির অভিযোগ। রেরে করে মতুয়াদের সঙ্ঘ পরিচালকের পরিবারকে নিশানা করছে বিরোধী দলগুলি। জবাবে মন্ত্রী, অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে, এহেন কাজের জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন তৃণমূল সরকারকে।
কী অভিযোগ?
বুধবার গাইঘাটা বিডিও অফিসে সিপিআইএমের থেকে আবাস যোজনা নিয়ে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। মঞ্চে থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য বনগাঁ সাংসদ শান্তনু ঠাকুরকে আক্রমণ করেন। একটি রেশন কার্ডের নম্বর উল্লেখ করে বিডিও-র উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'বিডিও সাহেব শুনুন আমি একটা নাম্বর বলছি । নম্বরটি হল ০৫৪৫১৬০০৭৪। এই রেশন কার্ডটি পিএইচএইচ ক্যাটাগরির (পুওর হাউজ হোল্ড)। অর্থাৎ এই ক্যাটারগরির কার্ডে গরীব মানুষ এই কার্ডে রেশন পেয়ে থাকেন। এটি বনগাঁ লোকসভার সংসদ শান্তনু ঠাকুরের পরিবারের।' তাঁর প্রশ্ন, একজন সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নিকট আত্মীয় কী করে এই কার্ড ব্যবহার করেন? তথ্য ভুল হলে শান্তনু ঠাকুর চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে কোর্টে যেতে পারেন বলেও জানান তন্ময় ভট্টাচার্য।
কী বলেছেন রেশন ডিলার?
রেশন ডিলার জয়ন্ত মৃধা বলেন, 'শান্তনু ঠাকুরের পরিবারের চারজনেরই পিএইচএইচ ক্যাটাগরির কার্ড আছে। শান্তনু ঠাকুর, মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর, ছবিরানি ঠাকুর ও সুব্রত ঠাকুরের নামে পিএইচএইচ ক্যাগরির কার্ড আছে। প্রত্যেকটাই সচল আছে। মন্ত্রীর মা ছবিরানি ঠাকুর প্রতি মাসে রেশন তুলতে আসেন। গত মাসেও তারা রেশন তুলেছেন। এই কার্ডে ১০ কেজি চাল, গম পেয়ে থাকেন।'
অভিযোগের প্রেক্ষিতে শান্তনু ঠাকুরের জবাব-
অভিযোগ মেনে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। খাদ্য দফতরকে তোপ দেগে মন্ত্রী বলেন, 'রেশন কার্ড তৈরির সময় কোন ক্যাটাগরির তা পুঙ্খপুঙ্খ দেখে তো হয়নি। খাদ্য দফতর থেকেও এনক্যুয়ারি হয়নি। আমি রেশন কার্ডগুলো দেখিনি। মা রেশন তোলেন। এবার তাঁর পক্ষে জানা সম্ভব নয় কার্ডগুলো কোন ক্যাটাগরির। এসবের জন্য তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দায়ী। এগুলো তদন্তের জন্য বলব।' শান্তনুর কথায়, 'সব জানার পর আমি কার্ড স্যারেন্ডার করে দেব। আমার তো আর এসবের প্রয়োজন নেই।'
এই প্রসঙ্গে গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস বলেন, 'আমরা জানতে পেরেছি শান্তনু ঠাকুর সহ তাঁর পরিবারের কয়েকজনের পিএইচএইচ ক্যাটাগরির রেশন কার্ড আছে। তাঁদের উচিত ছিল এই কার্ডগুলিকে স্যারেন্ডার করানো। কিন্তু তাঁরা সেটা করেননি। এর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা আমরা দেখছি।'