Shahjahan Freedom Fighter Poster: উত্তাল সন্দেশখালি। টানা প্রায় ৪৯ দিন ধরে বেপাত্তা সন্দেশখালির 'বাদশা' শেখ শাহজাহান। তার টিকি খুঁজে পাচ্ছে না বাংলার পুলিশ। শাহজাহানের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছে গ্রামবাসীদের একটা বড় অংশ। ডিজি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছেন। এসবের মধ্যেই আলিপুরদুয়ারজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে চাঞ্চল্যকর পোস্টার। সন্দেশখালি কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানকে স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে আখ্যা দিয়ে পোস্টার পড়ে কলেজ হল্ট এলাকার কংগ্রেসের পার্টি অফিসের সামনে। তাঁকে স্যালুট পর্যন্ত জানানো হয়েছে। পোস্টার পড়েছে 'সুশীল নাগরিকবৃন্দ'র তরফে। এই পোস্টার ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় শহরজুড়ে।
জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ারের কলেজ হল্ট এলাকার দোকানের ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে এসে দেখেন, কংগ্রেসের পার্টি অফিসের সামনে একটি পোস্টার টাঙিয়ে রাখা হয়েছে। সেই পোস্টারে লেখা রয়েছে- 'স্বাধীনতা সংগ্রামী শেখ শাহজাহান, তোমাকে জানাই স্যালুট।' তার নীচে লেখা, 'সুশীল নাগরিকবৃন্দ'।
আরও পড়ুন- Sandeshkhali Protest: এবার স্থানীয়দের প্রবল রোষে শাহজাহানের ভাই সিরাজ! ফাঁসির দাবি, আগুন অফিসে
পথচারী ও এলাকার ব্যবসায়ীদেরকে পোস্টার দেখে দাঁড়িয়ে পড়তে লক্ষ্য করা যায়। সকাল সকাল এই পোস্টার দেখে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, 'সকালে দোকানে যাওয়ার পথেই দেখি এমন পোস্টার লাগানো রয়েছে। গুরুতর অপরাধে অভিযুক্তকে স্বাধীনতা সংগ্রামী আখ্যা দিয়ে পোস্টার দেওয়া হচ্ছে সেটাকে কখনও সমর্থন করা যায় না।'
এই ঘটনায় জেলার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে বিরোধী বিজেপি যেমন শাসকদলকে তোপ দাগতে ছাড়ছে না, তেমনি কংগ্রেসের তরফে কটাক্ষ করে পোস্টার দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলেও ধারণা অনেকের।
আরও পড়ুন- Sandeshkhali Journalist Bail: সন্দেশখালিতে ধৃত সাংবাদিকের জামিন, রাজ্যকে তুলোধনা হাইকোর্টের
এ বিষয়ে কংগ্রেসের জেলা কার্যনির্বাহী সভাপতি শান্তনু দেবনাথ বলেন, 'কে বা কারা রাতের অন্ধকারে পার্টি অফিসের সামনে এধরনের পোস্টার লাগিয়ে রেখে গিয়েছে। এ ধরণের পোস্টার সমর্থনযোগ্য নয়। আমাদের দলের কেউই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত নই। তবে কেউ হয়তো রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করতে একাজ করে থাকতে পারে।'
অপরদিকে, বিরোধী বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মিঠু দাস বলেন, 'তৃণমূলের কাছে শেখ শাহজাহানের মতো বর্বর, নারী নির্যাতনকারী ব্যক্তি স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও সাধারণ মানুষের কাছে নন। সন্দেশখালির ঘটনায় যেমন পুলিশ প্রশাসন দলদাসের ভূমিকা পালন করেছে, ঠিক তেমনি এখানেও যাঁরা এই পোস্টারিং করেছে তাঁদেরকে পুলিশ ধরতে পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।' তাঁর কথায়, 'কংগ্রেস ও তৃণমূল যে একই পাতার এপিঠ আর ওপিঠ তা এদিনের কংগ্রেস পার্টি অফিসের সামনে পোস্টার পড়া থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।'
তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর মজুমদার বলেন, 'এই পোস্টার কংগ্রেস যদি নাই লাগিয়ে থাকে তাহলে তারা সেখান থেকে পোস্টারটিকে খুলে ফেলল না কেন এখনও? এটাই প্রশ্ন। এ ধরণের কাজ বিজেপিই করতে পারে। এটা তাদের একটি ঘৃণ্য রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ।'
এই ঘটনায় জেলার রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কে বা কারা এই 'সুশীল নাগরিকবৃন্দ'? কখন টাঙিয়ে রেখে গেল এই পোস্টার শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে?
আরও পড়ুন- Mamata Suvendu: ‘দিদি নাম্বার ওয়ানে’র সেটে মমতা, ছবি ফাঁস শুভেন্দুর! কীসের ইঙ্গিত?