বাইশ বছরের প্রেম। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন সহবাস। শেষ পর্যন্ত প্রেমিকাকে এড়িয়ে অন্য পাত্রীকে বিয়ে করতে গিয়েই ঘটল বিপত্তি। প্রেমিকার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করল পাত্রকে। ঘটনা শেওড়াফুলির রাজাবাগানের।
বছর ৪৭ এর সৌভিক চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে গত বাইশ বছর ধরে সম্পর্ক শেওড়াফুলি ঘোষ পাড়ার বছর ৪০ এক মহিলার। একাধিকবার সহবাস করেন তাঁরা। অভিযোগ, প্রেমিকা যখনই বিয়ের কথা বলতেন তখনই গুণধর সৌভিক নানা অছিলায় এড়িয়ে যেতেন। এমনকী মাঝে মধ্যে বিয়ের জন্য পণের দাবিও করতেন।
প্রেমিকার দিদি জুঁই সরকারের অভিযোগ, তাঁর বোন ও বোনের প্রেমিক এর আগে তারাপীঠে গিয়ে তিন দিন কাটিয়ে এসেছিল। সেখানেই নাকি বোনকে সিঁদুর পরিয়ে দিয়েছিলেন সৌভিক চট্টোপাধ্যায়। প্রমাণস্বরূপ সেই ছবিও নাকি আছে দিদি জুঁইয়ের কাছে। কিন্তু, বাড়িতে এসে সৌভিক বিয়ের কথা বলেননি। এছাড়াও অভিযোগ যে, সৌভিকের পরিবার করোনা আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হলে প্রেমিকাকে আয়া সাজিয়ে তাঁদের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্ত।
এসব করেই কাটছিল বছরের পর বছর। এর মধ্যে জানাজানি হয় যে, সোদপুরে বিয়ে ঠিক হয়েছে সৌভিকের। কিন্তু, কবে তা জানতে পারেননি প্রেমিক। রবিবার সৌভিকের বাড়িতে গায়ে হলুদের তত্ত্ব আসতে দেখে সন্দেহ হয় প্রেমিকার। জুইদেবীর কথায়, কার বিয়ে জিজ্ঞাসা করলে সৌভিকের জবাব ছিল তাঁর আত্মীয়র বিয়ে হচ্ছে।
শেষ পর্যন্ত শেওড়াফুলি পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে অভিযোগ জানান প্রেমিকা। শেওড়াফুলি ফাঁড়ি থেকে শ্রীরামপুর মহিলা থানায় পাঠানো হয় তাঁকে। মহিলা থানায় সৌভিক চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস, বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ শেওড়াফুলি রাজাবাগানে সৌভিকের বাড়িতে পৌঁছলে দেখেন, পাত্রী পক্ষ বর নিতে হাজির হয়েছেন। ফুল দিয়ে সাজানো গাড়ি সমেত পাত্রকে থানায় ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে। ধৃত সৌভিকের দাদা কৌশিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে ভাই এর বিরুদ্ধে। গত চার মাস আগে অভিযোগকারী তাXদের বাড়িতে আয়ার কাজ করতেন। ষড়যন্ত্র করা হয়েছে ভাইয়ের বিরুদ্ধে। যে ছবিতে সৌভিক আর অভিযোগকারীকে দেখা যাচ্ছে সেটাও সাজানো।'